দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: দেশের প্রায় ছয় হাজার মানুষ উইলসন নামক স্নায়ুর অসুখে আক্রান্ত। কিশোর বয়সে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এক সংবাদ সম্মেলন জানানো হয়, আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে হলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
গত চার বছরে বিএসএমএমইউ–তে উইলসন রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন ২০০ জনের বেশি। আক্রান্তদের বেশিরভাগ স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারেন না।
এদেরই একজন কায়সার মিয়া। চার বছর ধরে হবিগঞ্জ থেকে দুই মাস পর পর ঢাকায় এসে চিকিৎসা নিতে হয় তাকে।
কায়সার মিয়ার এক আত্মীয় বলেন, ‘ওষুধ খেলে ভালো থাকে আর না খেলে চলতেই পারে না। লেখাপড়ায় আগে ভালোই ছিল, এসএসসি পরীক্ষার আগে আগে অসুস্থ্য হয়। ফরম ফিলাপ করার পরেও পরীক্ষা দিতে পারেনি।’
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন জানানো হয়, বিএসএমএমইউ–তে ৫০ জন রোগীর জিন বিশ্লেষণে ৬ জনের দেহে বিরল ধরনের মিউটেশন পাওয়া গেছে। তবে এর প্রভাব এখনো জানা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আহসান হাবিব হেলাল বলেন, ‘এই নতুন ধরনের যে মিউটেশন বাঙালি এথনিসিটির মধ্যে হলো, তাহলে কি এদের নতুন কোনো উপসর্গ হবে কিনা। কারণ এই জিনই তো সব উপসর্গ তৈরি করে। আমাদের বৈশিষ্ট তৈরি করে জিন। এ ধরনের রোগের উপসর্গও প্রকাশ করে জিন।’
চিকিৎসকরা জানান, উইলসন একটি বংশগত রোগ। আক্রান্তদের বেশিরভাগের বয়স ত্রিশ বছরের মধ্যে। এর লক্ষণ হচ্ছে-- ঢোক গিলতে সমস্যা, হাত-পা কাঁপা ও শক্ত হয়ে যাওয়া, ঘাড় মোচড়ানোসহ নানা শাররীক সমস্যা।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বলেন, ‘খালাতো বোন, মামাতো বোন, ফুফাতো বোন এ ধরনের বিয়েশাদি বন্ধ করে দিতে হবে। তাহলে এই রোগটা হবে না। এমন যদি একটি ফ্যামিলিকে কনফার্ম ডায়াগনোসিস করা যায়, তাহলে তার সিবলিংদের (ভাই–বোন) পরীক্ষা করে আর্লি ডিটেকশন করা যাবে।’
উইলসন রোগের চিকিৎসায় ওষুধ খেতে হয় সারা জীবন। একজন রোগীর মাসে দুই হাজার টাকার ওষুধ প্রয়োজন হয় বলেও জানান চিকিৎসকরা।