আমাদের বার্তা, ঝালকাঠি: রেমালের ঝড়ের পর বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলেও টানা চারদিন ধরে বিদ্যুৎ-বঞ্চিত এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওজোপাডিকে অফিসে এসে ক্ষোভে ফেঁটে পড়েন। বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতিকে দায়ী করে মুক্তিযোদ্ধা দায়িত্বরত প্রকৌশলী বলেন, আপনার ঘুষ খাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করিনি। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে রিজাইন দিয়ে চলে যাবেন।
ঝালকাঠি ওজোপাডিকো অফিসে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এভাবেই তীব্র ক্ষোভ ঝাড়েন এই মুক্তিযোদ্ধা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন লিমিটেড ওজোপাডিকোর ঝালকাঠি অফিসে সংবাদ সংগ্রহের জন্য যায় দৈনিক আমাদের বার্তা প্রতিবেদক।
এ সময় ছুটে আসেন এক বয়োজে্যষ্ঠ ব্যক্তি। তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে হন্তদন্ত হয়ে তিনি ঢুকে পড়েন বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কক্ষে। এ সময় তিনি নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে প্রকৌশলীর কাছে জানতে চান, রেমালের চার দিন পার হলেও এখনো কেনো তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি। শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকার এই মুক্তিযোদ্ধার নাম খন্দকার শফিকুল আলম (৭০)।
কৃষ্ণকাঠি এলাকায় তিনিসহ দুই শতাধিক পরিবার এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় ওজোপাডিকোর দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। বিদ্যুত লাইন সংস্কার না করায় তীব্র গরমের সঙে্গ পানিবঞ্চিত হয়ে এ মুক্তিযোদ্ধা রাগে থরথর করে কাঁপতে থাকেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলীকে বলেন, আপনার দায়িত্ব কী ঘুষ খাওয়া, ঘুষ খাওয়ার জন্য কি দেশ স্বাধীন করেছি। পরে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে প্রকৌশলীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে চলে যান মুক্তিযোদ্ধা।
তবে ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) মো. আব্দুস সালাম বলেন, ঝড়ে পৌর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গাছপালা এবং বিদ্যুৎ খুঁটি উপড়ে পড়েছে। যে কারণে শ্রমিক ভাড়া করেও সব স্থানে সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে খুব দ্রুত পুরো কাজ সম্পন্ন করে সব স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর আওতায় ২৫ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে রেমালের ৭২ ঘন্টা পর গত বুধবার রাতে জেলা শহরে অর্ধেক সংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পায়।