দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো…’ -এর রচয়িতা, বিখ্যাত গ্রন্থকার ও কলাম লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা সাপ্তাহিক জয়বাংলার প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ছিলেন। তিনি তার কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক ও ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।
আব্দুল গাফফার চৌধুরী ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বাকেরগঞ্জ জেলার মেহেন্দিগঞ্জ মহকুমার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন হাজি ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা মোসাম্মৎ জহুরা খাতুন।
১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ‘দৈনিক ইনসাফ’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে গাফফার চৌধুরী কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর তিনি বহু পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সাপ্তাহিক ‘সোনার বাংলা’র সম্পাদক হন। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ৬ দফা আন্দোলনের মুখপত্র হিসেবে ‘দৈনিক আওয়াজ’ বের করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান। সেখানে মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক ‘জয়বাংলা’য় লেখালেখি করেন। এসময় তিনি কলকাতায় ‘দৈনিক আনন্দবাজার’ ও ‘যুগান্তর’ পত্রিকায় কলামিস্ট হিসেবে কাজ করেন। তিনি ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডনের উদ্দেশে পাড়ি জমান। এরপর তার প্রবাস জীবনের ইতিহাস শুরু হয়। প্রবাসে বসেও গাফফার চৌধুরী বাংলাদেশের প্রধান পত্রিকাগুলোতে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত নিয়মিত লিখে গেছেন। বাংলাদেশের শীর্ষ দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত আবদুল গাফফার চৌধুরীর রাজনীতি, সমসাময়িক ঘটনা ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী নিয়ে লেখা কলাম অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলো।
আব্দুল গাফফার চৌধুরী ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিলো ৮৭ বছর। ঢাকার মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।