মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের রূপকার জননেতা আব্দুল মান্নানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
দিনটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য জননেতা আবদুল মান্নান স্মৃতি পরিষদ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এদিন মরহুমের ঢাকা ও টাঙ্গাইলের বাসভবনে কোরআন তেলাওয়াত, বিশেষ দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও কাঙালি ভোজের আয়োজন করা হয়েছে।
জননেতা আব্দুল মান্নান মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলা ও বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর হিসেবে গৌরবোজ্জ্বল ভুমিকা পালন করেছেন।
৬ দফা আন্দোলনের সময়ে বঙ্গবন্ধুসহ সব নেতৃবৃন্দের কারাবরণ অবস্থায় দলীয় প্রচার সম্পাদক আব্দুল মান্নান এবং সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে আন্দোলন এগিয়ে যায়। শিক্ষকতা দিয়ে শুরু করলেও তিনি আইনকেই শেষ পর্যন্ত পেশা হিসেবে বেছে নেন। তিনি বাংলাদেশ ইনকাম ট্যাক্স লইয়ার'স এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জননেতা আবদুল মান্নান জেনারেল আইয়ুব খানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত রাউন্ড টেবিল বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে ১৯ এপ্রিল থেকে মুজিবনগর সরকারের তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে চূড়ান্ত বিজয় পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সফল রূপকার এবং এমএনএ ইনচার্জ হিসেবে বাঙালিদের জুগিয়েছেন অনুপ্রেরণা।
তিনি মুজিবনগর সরকারের মুখপাত্র আব্দুল গাফফার চৌধুরীর সম্পাদিত ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন।
দিল্লিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের প্রস্তাব নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি থেকে শুরু করে তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে আবদুল মান্নানের সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এছাডাও তিনি দীর্ঘ ৬০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে টাঙ্গাইল জেলা হাসপাতাল, মহেরা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, বেগম ফজিলাতুন নেসা মহিলা মহাবিদ্যালয়, আতিয়া মহিলা কলেজসহ অসংখ্য সমাজ সেবামূলক কাজ করেছেন।