বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর ‘মাথাব্যথা’ কেন, তা বুঝতে পারছেন না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘২০-২২টি দেশে এ বছর নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু কোথায় কারও কোনো কথা, কোথাও নির্বাচন নিয়ে বা অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোনো কথা নেই। ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে মেরে ফেলেছে। এসব নিয়ে তো কেউ কোনো কথা বলে না—বড় বড় দেশ, শক্তিগুলো। আমাদের দেশ নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন? কারণটা কী? আমরা তো বুঝি না।’
আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণা দিতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতাদের বক্তৃতা থেকে এমন ধারণা জন্মাচ্ছে যে আগামী নির্বাচন নিয়ে ভারত আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিএনপির পক্ষে। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ এই দুই দেশের ‘মাঠের লড়াইয়ে’ পরিণত হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্ন করা হয় ওবায়দুল কাদেরকে।
জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশের ইলেকশন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখন বিভিন্ন দেশের এ অঞ্চলকে ঘিরে ভূরাজনৈতিক কৌশল আছে। সেখানে আমেরিকার একটা স্বার্থ আছে, ভারতেরও আছে। থাকাটা খুব স্বাভাবিক। ওদিকে চীন আছে, একটা বড় শক্তি।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ভারত গতকাল (শনিবার) আমেরিকাকে তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের মতামত জানিয়েছে। তারা আমাদের কখনো বলেনি তোমরা নির্বাচনে..., তত্ত্বাবধায়ক আনো, নির্বাচন ব্যবস্থা…এসব কথা আমেরিকাও বলেনি।’
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করেছি, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কেউই বলেনি যে তত্ত্বাবধায়কের দরকার আছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হবে। তাদের দেশে এটা নেই, দুনিয়ার কোথাও নেই, কেন বাংলাদেশে হবে?’
নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের তৎপরতা সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা তাদের কথা বলুক, আমরা আমাদের কাজ করব। আমাদের জনগণের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতি, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করব, অবাধ নির্বাচন করব। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করব, সেটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
নাইজারের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের ঘটনা উল্লেখ করে পশ্চিমা দেশগুলোকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নাইজারে তারা কী করে দেখব। আসল জায়গায় তারা পারে না। ওখানে সামরিক জান্তা বলে দিয়েছে আগামী তিন বছর নির্বাচন নিয়ে কোনো কথাই হবে না। ওখানে তারা কী করে, দেখার আছে।’
সামনের সময়টা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন কি না, জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সময়টা চ্যালেঞ্জিং। তবে রাজনীতি, রাষ্ট্রীয় জীবনে, ব্যক্তিগত জীবনে কোনো চ্যালেঞ্জই অনতিক্রম্য নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন, সড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরি, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ।