ডিসেমিনেশন অব নিউ কারিকুলাম স্কিমের আওতায় জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১-এর আলোকে প্রণীত ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতে পাঠ্যপুস্তকের সাহায্যে শিখন কার্যক্রমে বিষয়ভিত্তিক উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষক হতে আগ্রহী মাধ্যমিক শিক্ষকদের আবেদন করতে নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। সে মোতাবেক আমি আবেদন করি। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে আমি ইংরেজি বিষয়ের উপজেলা প্রশিক্ষক নির্বাচিত হয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ৩০ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ এক তালিকায় ১১৩৩২ ক্রমিকে উপজেলা প্রশিক্ষকের তালিকায় আমার নাম থাকলেও পরেরদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জুলফিকার হোসেন স্বাক্ষরিত এক তালিকায় আমার নাম দেখতে পাইনি। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন ‘গতকাল জুম মিটিং এ স্কিম ডাইরেক্টর স্যারের মৌখিক সিদ্ধান্তেই আপনাদেরকে বাদ রাখা হয়েছে।’ উল্লেখ্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল গভমেন্ট হাই স্কুলে ২ নভেম্বর থেকে শুরু করে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
প্রত্যেক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা কোনো অংশেই কম নয়। সহকারী প্রধান শিক্ষকগণ প্রশাসনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি কমপক্ষে ১২টি ক্লাস করে থাকেন। তাই নতুন কারিকুলামে সরকারের এই বিশাল কর্মযজ্ঞকে বাস্তবায়নের জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ আবশ্যক। নতুন কারিকুলামে বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন পারদর্শিতার সূচক (Pi) এর আলোকে শিক্ষার্থী কতোটুকু দক্ষতা অর্জন করেছে তা মূল্যায়ন করা হয়। আমরা যেহেতু ক্লাস নেই এবং তদারকিও করি, সেজন্য সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ অতীব জরুরি। তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ের প্রশিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষক হওয়াতে আপত্তির কারণ আদৌ বোধগম্য নয়। বরং প্রতিটি বিষয়ে উপজেলা পর্যায়ে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক থাকলে তৃণমূল পর্যায়ে প্রশিক্ষণ আরো ফলপ্রসূ হতে পারতো। যে কোনো প্রশিক্ষণ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই দিয়ে থাকেন। তাই সহকারী প্রধান শিক্ষক থাকলে উপজেলা প্রশিক্ষণ আরো বেগবান হতো। কারণ এখানে সকল প্রশিক্ষণার্থীই সহকারী শিক্ষক। প্রয়োজন মনে করলে প্রধান শিক্ষকও রাখা যেতে পারে। কোনো প্রজ্ঞাপন ছাড়া রাতারাতি কিভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষক বাদ পড়লো সেই রহস্য আজো জানা হয়নি। যাহোক নতুন কারিকুলাম সফল বাস্তবায়নের জন্য অষ্টম ও নবম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ এখন আমাদের সময়ের দাবি। কারণ ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নতুনভাবে নতুন আঙ্গিকে শিখন শিক্ষণ কার্যক্রম চলবে।
তবে গত ৮ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জেলা শিক্ষা অফিসার আশ্বস্ত করেছেন যে, শীঘ্রই সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষকদের চার দিনব্যাপী বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ এবং সাতদিন প্রশাসনিক মোট ১১ দিন প্রশিক্ষণ হবে। এই সংবাদে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। আমাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে উপজেলা প্রশিক্ষকের আওতায় আনতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক: সহকারী প্রধান শিক্ষক, নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া