জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে মো. ইকবাল হোসেন নামে এক পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে। বিল বকেয়া থাকায় বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে উপজেলার পরিষদ চত্বরের আবাসিক কোয়ার্টারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লাইন টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত।
জানা যায়, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদের কোয়ার্টারের বেলী-১, হাসনাহেনা-১ ও আনসার ব্যারাকের দুই বছরের পল্লী বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে। বৃহস্পতিবার পল্লী বিদ্যুৎ দেওয়ানগঞ্জ জোনাল অফিসের এজিএম শেখ ফরিদের নির্দেশে লাইন টেকনিশিয়ান ইকবাল হোসেন ও লাইন টু লেবেল-১ শাহজামাল ইয়াছিন নামের দুই কর্মচারী বকেয়া বিলের জন্য উপজেলা চত্বরে যান।
সেখানে কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে উপজেলা পরিষদের কোয়ার্টারের বেলী-১, হাসনাহেনা-১ ও আনসার ব্যারাক পান, কিন্তু দায়িত্বশীল কাউকে না পেয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীরা এজিএম শেখ ফরিদকে ফোনে বিষয়টি জানান। তখন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেন দেন তিনি। নির্দেশ পেয়ে ইকবাল হোসেন, শাহজামাল ইয়াছিন আনসার ব্যারাকের আনসারদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা জানান। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসানকে ফোনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি জানান আনসার সদস্যরা। এক পর্যায়ে ইউএনওর নির্দেশে ইকবাল হোসেনকে আনসার ব্যারাকের বারান্দার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন আনসার সদস্যরা।
ভুক্তভোগী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি ইচ্ছে করে সেখানে যাইনি। ঊর্ধ্বতনের নির্দেশ মোতাবেক আমি ও শাহজামাল ইয়াছিনকে সঙ্গে নিয়ে আনসার ব্যারাকে যাই। সেখানে আনসারদের পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা বললে তারা বাধা দেন এবং ইউএনওকে ফোন করেন। ফোনে আমাদের কে পাঠিয়েছেন জানতে চাইলে এজিএম শেখ ফরিদের কথা জানাই। এক পর্যায়ে ইউএনও ব্যারাকের আনসারদের নির্দেশ দেন আমাদের বেঁধে রাখতে এবং ইউএনওর নির্দেশে আমাকে বারান্দার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন আনসার সদস্যরা।’
এজিএম শেখ ফরিদ বলেন, ‘দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদের কোয়ার্টারের বেলী-১, হাসনাহেনা-১ ও আনসার ব্যারাকের দুই বছরের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। ঊর্ধ্বতনের নির্দেশ মোতাবেক সেই বকেয়া বিলের জন্য লাইন টেকনিশিয়ান ইকবাল হোসেন ও লাইন টু লেবেল-১ শাহজামাল ইয়াছিনকে পাঠিয়েছিলাম। আমি ধারণা করিনি এতেই এমন ঘটনা ঘটবে। তবে ব্যাপারটি মীমাংসা হয়ে গেছে। আমাদের আর কোনো অভিযোগ নেই।’
দেওয়ানগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের ডিজিএম ইয়াহিয়া সিদ্দিকী জানান, ওই কোয়ার্টারের দুই বছরের অধিক বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। সে কারণেই লোক পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এমন ঘটনা দুঃখজনক। তবে ঘটনার পরপরই মীমাংসা হয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। এ বিষয়ে কিছু জানি না।’