শিক্ষায় বৈষম্য দূর করতে ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ নামে হঠাৎ আবির্ভাব হওয়া একটি সংগঠন। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দেশে ৫০০ টাকা বেতনে প্রাথমিক শিক্ষা ও ইবতেদায়ি শিক্ষা শুরু হয়। হাজার হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলেও এ পর্যন্ত একটি ইবতেদায়ী মাদরাসাও জাতীয়করণ করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ৪ হাজার ৩১২টি ইবতেদায়ি মাদরাসাকে স্কেল অনুযায়ী বেতন ও এমপিও প্রদানের নির্দেশ প্রদান করলেও দীর্ঘ ৩৯ বছরে একটিও এমপিও করা হয়নি।
তারা বলেন, ৩৯ বছর ধরে বেতন ভাতা না থাকায় শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি সাহায্য না থাকার কারনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হচ্ছে। অবিলম্বে সকল রেজিস্ট্রশনকৃত ইবতেদায়ি মাদরাসাকে এমপিও বিল প্রদানের আওতাভুক্ত করার দাবি জানান তারা।
এসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. মো. শহিদুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু যেখানে মক্তব বাদ দিয়ে ফোরকানিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন সেই প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা নিয়ে কেন এত বৈষ্যম্য। প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষর করার পরেও শিক্ষকদের এই ন্যায্য দাবি পূরণ করা হচ্ছেনা। ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণ করে শিক্ষকদের প্রতি এ বৈষম্য বন্ধ করা হোক।
সাত দাবি:
১. স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা স্থাপন, স্বীকৃতি পরিচালনা, জন কাঠামো এবং বেতন ভাতা / অনুদান সংক্রান্ত নীতিমালা ২০১৮ দ্রুত সময়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। ২. বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে পূর্বের রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে কোড প্রদান ও নবায়ন চালু করতে হবে। ৩. শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও মেধাবৃত্তি পূর্বের মতো দ্রুত সময়ে চালু করতে হবে। ৪. মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডাটাবেজকৃত ৭ হাজার ৪৫৩ টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে।
৫. স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি ২০২৩ মাদরাসার অবকাঠামো সরকারি ভাবে সংস্কার / মেরামত/ নির্মান জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে। ৬. ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিষ্টিটিউট (আইইইআর) কর্তৃক প্রস্তুতকৃত স্টাডি রিপোর্ট দ্রুত জমাকরণ এবং সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
৭. এক হাজার ৫১৯ টি অনুদানপ্রাপ্ত শূন্য পদের বিল দ্রুত সময়ে ছাড় করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে হাফেজ আহমাদ আলীর সভাপতিত্বে ও মো. রেজাউল হকের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামি শিক্ষা উন্নয়নের সভাপতি অধ্যক্ষ ড. একে এম মাহবুবর রহমান, বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, ড. মো. নজরুল ইসলাম আল মারুফ, ড. মো. শহিদুল হক এবং ইসলামি শিক্ষা উন্নয়ন ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।