দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: সারা দেশের ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলো সরকারিকরণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এ মাদরাসাগুলোর শিক্ষকরা বলছেন, একই সিলেবাসে পড়ানো হলেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সরকারি করা হয়েছে, কিন্তু ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা এমপিওভুক্তও হতে পারেননি। তারা কিছু টাকা ভাতা বাবদ পেলেও তা অপ্রতুল। ফলে মাদরাসাগুলোর শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
রোববার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আয়োজিত মানববন্ধনে ইবতেদায়ি মাদরাসা সরকারিকরণের দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে জানান শিক্ষক নেতারা।
মানববন্ধনে সংগঠনের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান, শিক্ষক নেতা কাজী ফয়েজুর রহমান, বশির বিল্লাহ আতাহারী, সামছুল আলম, মাহমুদুল হাসান, আ রহিম, মো. আলামিন, আ হান্নান, খোরশেদ আলম, আ কুদ্দুস, সওকত মাস্টার, ছাইফুল্লাহ হেলাল, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. নুরুল আমিন, আ করিম ভুইয়াসহ অনেকে মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে একই পরিপত্রে রেজিস্ট্রার বেসরকারি প্রাইমারি ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিগত সরকারের সময়ে ধাপে ধাপে বেতন বৃদ্ধি করে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণায় ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল সরকারি করা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সরকারি একই সিলেবাসে ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ইবতেদায়ির ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অতীতে সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও বর্তমানে ৫ম শ্রেণি বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। অথচ মাস শেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ২২ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। কিন্তু ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদেরকে জাতীয়করণ তো দূরের কথা, এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তারপরও তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষক নেতারা আরো বলেন, ১ হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা সর্বসাকুল্যে প্রধান শিক্ষক ২ হাজার ৫০০ টাকা, সহকারি শিক্ষক ২ হাজার ৩০০ টাকা ভাতা পান। বাকি রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত মাদরাসাগুলোর শিক্ষকরা ৩৯ বছর বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা বারবার বেতন-ভাতা দেয়ার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা কয়েক দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো, রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো সরকারিকরণ করা। প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ সব সুযোগ-সুবিধা দেয়া। রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কোডবিহীন মাদরাসাগুলোকে অবিলম্বে কোড নাম্বারে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রাথমিকের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষকদের পিটিআই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা। সব মাদরাসায় ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা। মাদরাসাগুলোকে স্থায়ী রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা ও ভৌত অবকাঠামো নিশ্চিত করা।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।