ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ, দুর্নীতি ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালামের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। ইতিমধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণও শুরু হয়েছে দুদক। শুক্রবার (২৩ জুন) সকালে দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা নীলকমল পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে নীলকমল পাল বলেন, 'অভিযোগের বিষয়ে উপাচার্যকে এখনও চিঠি দেয়া হয়নি।' গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে নির্বাচনী বোর্ড বসে। প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে বোর্ডে থাকা অন্য সদস্যদের সঙ্গে বিভাগটির সভাপতি ড. বখতিয়ার হোসেনের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে ঘুষ গ্রহণ, দুর্নীতি ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ তুলে দুদকে লিখিত আবেদন করেন নিয়োগ প্রার্থী সাহবুব আলম। অভিযোগ আমলে নিয়ে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুদক।
দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের নোটিশে বলা হয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শেখ আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের সহকারী পরিচালক নীলকমল পালকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। অভিযোগকারী সাহবুব আলমের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৭ জুলাই সকাল ১০টায় তাকে কুষ্টিয়া কার্যালয়ে তলব করেছে দুদক।
অভিযোগকারী সাহবুব আলম বলেন, ‘ভিসি স্যার অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। ফাঁস হওয়া অডিওসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এটি আরও স্পষ্ট হয়েছে। সর্বাধিক যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও আমাকে নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তথ্য-উপাত্তসহ দুদকে অভিযোগ করেছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ডাকা হয়েছে।’
এদিকে গত ২০ জুন পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। গত ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যের ১৮টি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফাঁস হয়েছে। গত ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নিয়োগ সংক্রান্ত অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। এর একটিতে টাকার চেক ও মনোনীত প্রার্থীকে সুপারিশ করা হয়েছে কিনা– এ সংক্রান্ত আলাপন শোনা যায়। অন্যটিতে ওই বিভাগের দুই প্রার্থীর কাছে বোর্ডের আগে চেক জামানত রাখা ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত দেখিয়ে টাকা গ্রহণের বিষয়ে উপাচার্যের কথোপকথন শোনা যায়।
এরপর আরও কয়েকটি অডিও ফাঁস হওয়ায় গত এপ্রিল ও মে মাসে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত রেখেছিলেন উপাচার্য। জুন মাসে আবারও নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। এরপর আবারও কয়েকটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসব অভিযোগের সুরাহা না করেই নিয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন উপাচার্য।