দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন অজস্র মানুষ। চিরচেনা ব্যস্ত ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। তাই এই সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ উৎসব উপভোগে ভ্রমণ গন্তব্যের বিকল্প নেই। ঢাকায় বেশ কিছু বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে যেখানে ঈদ অবকাশে একটা দিন, কিছুটা সময় কাটাতে পারেন।
আহসান মঞ্জিল
ঢাকার নবাবদের আবাসিক ভবনগুলোর মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত স্থান আহসান মঞ্জিল বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এই ঈদে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নবাবদের আভিজাত্যের ছোঁয়া উপভোগ করার মতো মজা আর হবে না।
লালবাগ কেল্লা
লালবাগ কেল্লা মুঘল আমলে নির্মিত একটি অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভিড়ে মুখরিত থাকে লাল ইটের দর্শনীয় কেল্লাটি। সেই সঙ্গে দেখে আসতে পারেন কেল্লার পাশেই অবস্থিত ঐতিহাসিক লালবাগ শাহী মসজিদও।
বলধা গার্ডেন
রাজধানীর ওয়ারীতে অবস্থিত বলধা গার্ডেনে রয়েছে প্রায় দেড় হাজার প্রজাতির গাছ। এখানে একটি সুন্দর পুকুর আছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই বাগানে নানা ধরনের গাছের পাশাপাশি রয়েছে পর্যটকদের জন্য গেস্ট হাউস।
চিড়িয়াখানা
ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানার। ঈদের সময় ঢাকা চিড়িয়াখানা দর্শনার্থী কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এবারও দর্শনার্থীর ঢল নামবে চিড়িয়াখানায়। চাইলে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
জাতীয় সংসদ ভবন
রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবনটি শুধুমাত্র বাংলাদেশই নয় বিশ্বের অন্যতম সেরা স্থাপত্যশৈলীর বাস্তব উদাহরণ। মার্কিন স্থপতি লুই কানের নকশায় নির্মিত অত্যাধুনিক এই ভবনটি তার ব্যতিক্রমী আকার ও নকশার জন্য জনপ্রিয়। ভবনের প্রবেশাধিকার সাধারণ মানুষের না থাকলেও আশেপাশের পরিবেশ, কৃত্রিম লেক ও রাস্তার ওপর অবস্থিত অস্থায়ী খাবারের দোকানগুলো বিকেলের পর জমজমাট হয়ে ওঠে।
বুড়িগঙ্গা ইকোপার্ক
শান বাঁধানো নদীর ঘাটে নৌকা বাঁধা দেখতে যেতে হবে বুড়িগঙ্গা ইকোপার্কে। মৃদুমন্দ হাওয়া খেতে চাইলে এখানে নৌকায় করে ঘুরতে পারেন। জায়গাটি গাছগাছালিতে ঢাকা। গাছের সারির ফাঁকে পাকা রাস্তা। শহরের কোলাহল ছেড়ে রাজধানীর উপকণ্ঠ শ্যামপুরে প্রায় সাত একর জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে পার্কটি।
কার্জন হল
রাজধানীর শাহবাগে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কার্জন হল অবস্থিত। প্রায় ১১৫ বছরের পুরনো ব্রিটিশ স্থাপত্যের নজির ও ঐতিহাসিক ভবনটি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দ্বিতল এই ভবনটি ভারতবর্ষের তৎকালীন ভাইসরয় ও গভর্নর জেনারেল লর্ড কার্জনের নামানুসারে নির্মিত। লাল রঙা ইট দিয়ে কারুকার্যময় ভবনের সামনে রয়েছে সুন্দর ফুলের বাগান। ভবনের পেছনে রয়েছে প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক মুসা খাঁ মসজিদ ও বিশাল একটি পুকুর।
রমনা পার্ক
রাজধানীর শাহবাগ ও মিন্টু রোড এলাকা নিয়ে রমনা পার্কের অবস্থান। পার্কে রয়েছে নানান প্রজাতির গাছ এবং মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে। পরিবার নিয়ে পিকনিক করতে চাইলে রমনা পার্ক হতে পারে আদর্শ স্থান।
জাতীয় জাদুঘর
রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘর। জাদুঘরটি সুসংগঠিত এবং নৃতাত্ত্বিক ও আলংকারিক দিক থেকেও অনন্য। শিল্প বিভাগ, ইতিহাস ও ধ্রুপদী শিল্প বিভাগ, প্রাকৃতিক ইতিহাস বিভাগ এবং সমসাময়িক কিংবা বিশ্ব সভ্যতা বিভাগের মতো বিভিন্ন বিভাগে সাজানো বিশাল এই ভবনটির প্রতিটি কক্ষ। যা একদিনে দেখে চোখ জুড়াবে না। জাদুঘরে রয়েছে অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার।
হাতিরঝিল
এক পাশে সবুজ অন্যপাশে টলটলে জলের ওপর দিয়ে চলেছে যাত্রীবাহী ওয়াটার বাস। ওয়াটার বাসে চড়ে ঘোরা যাবে পুরো হাতিরঝিল। মগবাজার থেকে রামপুরা এবং গুলশান পর্যন্ত এই ওয়াটার বাসে ভ্রমণ করা যাবে নির্ধারিত ভাড়ায়। হাতিরঝিলের প্রকৃত রূপ উপভোগ করতে চাইলে চলে যেতে পারেন রাতের বেলা। আলো ঝলমলে ব্রিজ ও ঠাণ্ডা হাওয়া মন-প্রাণ জুড়িয়ে দেবে।