রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিপন্ন করার দায়ে বিশিষ্ট উইঘুর শিক্ষিকা অধ্যাপক রাহিল দাউতকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে চীন। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এক গোপন বিচারে তাকে এ সাজা দেওয়া হলেও সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক ডুই হুয়া ফাউন্ডেশন এক বিবৃতিতে এ তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল জিনজিয়াং প্রদেশে এক কোটি ২০ লাখ উইঘুর নাগরিক বসবাস করে। এদের অধিকাংশ মুসলিম। জিনজিয়াংয়ে উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম জাতিসত্ত্বার ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে। গত কয়েক বছরে চীনা পুনঃশিক্ষাকেন্দ্রে ১০ লাখের বেশি উইঘুর নাগরিককে আটক করা হয়েছে বলে ধারণা করছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। এ ছাড়া আরও হাজার হাজার মানুষকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
জিনজিয়াংয়ে চীনা কর্তৃপক্ষ গণহত্যা চালিয়েছে বলে দাবি করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের আরও অনেক দেশ। অ্যামনেস্টি ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলো সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য চীনকে অভিযুক্ত করেছে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে বেইজিং।
ডুই হুয়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জন কাম বলেছেন, অধ্যাপক রাহিল দাউতকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া নিষ্ঠুর ট্র্যাজেডি। এটি উইঘুর জনগণ এবং যারা একাডেমিক স্বাধীনতার কথা বলেন তাদের জন্য বড় ক্ষতি।
রাহিল দাউত জিনজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তিনি জাতিগত সংখ্যালঘু ফোকলোর রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষ দিকে জিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুরদের ওপর সরকারি দমনপীড়নের সময় তিনি নিখোঁজ হন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মিলছিল না। তবে গত মাসে জানা যায়, তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার এক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তার মামলার বিষয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিংয়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তার কাছে এমন কোনো তথ্য নেই। তবে তার বিচার দেশের আইন অনুযায়ীই হবে।