আমাদের বার্তা প্রতিবেদক: শিশু জুনাইদের ইচ্ছে ছিলো করোনাকালে উপবৃত্তির জন্য সরকার যে টাকা দিয়েছে সেই টাকা দিয়ে একটি স্কুল ব্যাগ ও ছাতা কিনবেন। কিন্তু সে আশা তার আর পূরণ হয়নি। কেননা, তার উপবৃত্তির টাকা অন্য কেউ তুলে নেয়। রিকশাচালক বাবার সন্তান জুনাইদকে এখন প্রতিদিনই ছেঁড়া স্কুল ব্যাগ ও ভাঙা ছাতা নিয়ে স্কুলে যেতে হয়।
এই ট্রাজিক ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর। জুনাইদ সিদ্দিক তখন দুর্গাপুর উপজেলার তেবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র। তবে এমন ঘটনা যে শুধু তার সঙ্গেই ঘটেছে তা কিন্তু নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এভাবে উপবৃত্তির টাকা বেহাত হওয়ার ঘটনা আছে ভুরি ভুরি।
দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা যায়, চূড়ান্তভাবে উপবৃত্তির জন্য নির্বাচিত হলেও দেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা পাননা। কেউ কেউ প্রথম কিস্তির টাকা পেলেও পরের কিস্তি বেহাত হয়। তবে উপবৃত্তির টাকা নয়ছয়ে এবার শক্ত অবস্থানে যাচ্ছে সরকার।
ইতোমধ্যে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়টি নজরে এসেছে শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের। বিষয়টি নিয়ে এক সভায় আলোচনার মাধ্যমে কিছু সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচি এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি স্কিম পরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আসাদুল হক স্বাক্ষরিত এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
এছাড়াও সবাইকে সতর্ক করে কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রকল্প কমিটির পক্ষ থেকে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় উপবৃত্তি ও অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির আশ্বাস দিয়ে প্রতারকচক্র শিক্ষার্থী/অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে- এ ধরনের প্রতারণার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন করতে পত্রিকায় সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এবং মাঠ পর্যায়ে সব উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে সতর্কীকরণ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী এখন থেকে আবেদন করা সফটওয়্যারে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের যে তালিকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে টানানো হয় তাতে অ্যাকাউন্ট নম্বর ও মোবাইল নম্বর প্রকাশ করা হবে না। শুধু শিক্ষার্থীদের নাম, শ্রেণি ও রোল নম্বর প্রকাশ করতে হবে।
ট্রাস্ট থেকে টাকা পাওয়ার জন্য কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন করার প্রয়োজন হয় না জানিয়ে এ বিষয়েও সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।
এর আগে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণার বিষয়ে সরকার সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছিলো।
তখন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের দাপ্তরিক নাম ব্যবহার করে ভুয়া পত্র পাঠানোর মাধ্যমে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগের কথা জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে দুর্নীতি ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনতার বিকল্প নেই। তাছাড়াও শিক্ষকদের নিজ অবস্থানে সৎ থেকে কাজ করতে হবে। এরসঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট মালিকেরাও যেনো ব্যবসার কাজ সৎভাবে পরিচালনা করেন। শিক্ষক- অভিভাবকের সঙ্গে সচেতন হতে হবে কর্তৃপক্ষকেও। তাহলেই এ ধরনের জালিয়াতি রোধ করা যাবে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।