সারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সিলেটও এর বাইরে নয়। প্রথমে বন্যা পরে আন্দোলন এবং কারফিউর কারণে পরীক্ষা পেছানোয় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় কাটাচ্ছে সুনামগঞ্জসহ সিলেট বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা।
এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনেকে বলছেন, পেছানোয় এইচএসসি পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে সময় কম পাবেন তারা। এ ছাড়া অন্য বোর্ডের শিক্ষার্থীরা সাতটি পরীক্ষা শেষ করেছে। সিলেট বোর্ডে শেষ হয়েছে মাত্র তিনটি। এ কারণে এই বোর্ডের শিক্ষার্থীদের উৎকণ্ঠাও বেশি।
জানা গেছে, সিলেট বিভাগে এবার ৮৩ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ১৫ হাজার ৫৮৬ জন, বাণিজ্য বিভাগে ১১ হাজার ৩৭৭ ও মানবিক বিভাগে ৫৬ হাজার ১৯১ জন। শুধু সুনামগঞ্জ জেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ১৫ হাজার ৭১৬ জন শিক্ষার্থী।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আবু সাফওয়ান বলে, গত ৩০ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই অন্য বোর্ডের শিক্ষার্থীরা বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা শেষ করেছে। বন্যার কারণে সিলেট বোর্ডে পরীক্ষা শুরু হয়েছে ৯ জুলাই থেকে। এ কারণে অন্য বোর্ডের শিক্ষার্থীরা তাদের চেয়ে ১০ দিন এগিয়ে। এখন যদিও কোনো বোর্ডেই পরীক্ষা হচ্ছে না। কিন্তু অন্য বোর্ডের শিক্ষার্থীরা বাংলা-ইংরেজিসহ প্রধান প্রধান পরীক্ষা শেষ করায় তাদের চাপ কমে গেছে, দুশ্চিন্তাও কম।
আরেক পরীক্ষার্থী বলেন, তাদের সহপাঠীদের মধ্যে যারা দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে বা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চান, তাদের অনেকে আইএলটিএসের জন্য ভর্তি হয়েছেন। আগস্টের শেষ দিকে তাদের স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেয়া হবে। এ কারণে আগস্ট সেশনে সিলেট বোর্ডের শিক্ষার্থীরা আইএলটিএসের জন্য ভর্তি হতে পারবেন না। এ নিয়েও অনেকেই আছেন দুশ্চিন্তায়।
এইচএসসি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ জমসিদ আলী গণমাধ্যমকে জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সিলেট বিভাগের স্থগিত পরীক্ষাগুলো ১৩ আগস্ট, ১৮ আগস্ট, ২০ আগস্ট ও ২২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে পরীক্ষার রুটিন দেয়া হয়েছে। আন্দোলন কিংবা কারফিউর কারণে স্থগিত হওয়া ১৪ জুলাই, ১৬ জুলাই, ১৮ জুলাই, ২১ জুলাই ও ২৩ জুলাইয়ের পরীক্ষার রুটিন এখনো হয়নি। বাংলা-ইংরেজির মতো পরীক্ষা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তায় আছেন।
সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, কারফিউ কিংবা অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে স্থগিত পরীক্ষা সারাদেশে একসঙ্গে হবে। সব পরীক্ষাই একেবারে বাধ্য হয়ে পেছানো হয়েছে। সামনে যে বিপদ আসে, সেটি মোকাবিলা করাই প্রধান বিবেচ্য বিষয় হবে। কারণে পরে কী হবে, সেটি অনেক সময় চিন্তা করার সুযোগ নেই।