এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বাকি পরীক্ষা অর্ধেক প্রশ্নোত্তরে অনুষ্ঠিত হবে। আর পরীক্ষা ১১ সেপ্টেম্বর থেকে আরো ২ সপ্তাহ পিছিয়ে যাবে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। তিনি বলেন, ১০০ নম্বরের প্রশ্নে উত্তর দিতে হবে ৫০ নম্বরের।
বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
এর আগে সকালে দৈনিক আমাদের বার্তার সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছিলেন, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন দাবি রয়েছে। সব দাবি পর্যালোচনা করে যেটা ন্যায়সঙ্গত হবে, পরীক্ষার্থীদের পক্ষে যাবে সেরকম সিদ্ধান্তই নেয়া হবে। কারণ এখানে পরীক্ষার্থীদের পরবর্তী উচ্চশিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ও ভাগ্য জড়িত।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে কিছু বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সংশোধিত নতুন সময়সূচি দিয়েও পরীক্ষা নিতে পারেনি শিক্ষা বোর্ডগুলো। কারণ দেশের বেশ কয়েকটি থানায় রাখা এইচএসসির প্রশ্নপত্র পুড়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর স্থগিত পরীক্ষাগুলো নিতে আবারো সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। পুনর্বিন্যাসকৃত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো শুরু হওয়ার কথা। তবে আর পরীক্ষায় বসতে চান না শিক্ষার্থীরা। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অটো পাসের দাবি তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা। নেমেছেন আন্দোলনেও। গত ১৫ আগস্ট নতুন সময়সূচি প্রকাশের পর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবারও রাজধানীসহ সারাদেশে অটো পাসের দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন পরীক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বোর্ডের সামনেও বিক্ষোভ করেছেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের অনেক সহপাঠী পরীক্ষার্থী আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হয়েছেন। তারা চিকিৎসাধীন। তাছাড়া বিভিন্ন থানায় রাখা প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র পুড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে তারা আর বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষায় অংশ নিতে চান না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবার ফের পরীক্ষা পেছানো হলো। একইসঙ্গে অর্ধেক প্রশ্নোত্তরে পরীক্ষা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর আরো তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার। সূচি অনুযায়ী, এখনো ১৩ দিনের মোট ৬১টি বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ বাকি রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) বিভিন্ন বিষয় থাকায় এতগুলো পরীক্ষা আটকে গেছে। যদিও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এর মধ্যে বাধ্যতামূলক বাংলা ও ইংরেজির চারটি বিষয় (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) এবং আইসিটি। ৮টি বিষয় ঐচ্ছিক (অপশনাল)।