সরাসরি নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধনের পর সড়ক অবরোধ করেন নিয়োগবঞ্চিত শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা। গতকাল বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর ইস্কাটনে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অফিসের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন। ফলে আশেপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ পথচারী ও অফিসগামীরা পড়েন ভোগান্তিতে। পরে এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যানের আশ্বাসে বিকেলে রাজপথ ছাড়েন অবরোধকারীরা।
নিয়োগবঞ্চিত নিবন্ধন সনদধারীদের শর্তহীনভাবে সরাসরি নিয়োগের দাবিতে তাদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। এতে এক থেকে ১২তম ব্যাচের সব নিয়োগবঞ্চিত নিবন্ধন সনদধারীদের শর্তহীনভাবে সরাসরি নিয়োগের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন তারা। সংগঠনের সভাপতি নীলিমা চক্রবর্তী সকাল থেকেই নানারকম বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। এনটিআরসি’র গঠন প্রণালীতে ছিলো দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক খুঁজে বের করার লক্ষ্যে পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সনদ দেয়া। সেই হিসেবে আমরা নিবন্ধিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সনদ লাভ করেছি। তাহলে কেনো আমাদেরকে অদক্ষ এবং অযোগ্য বলা হচ্ছে?
পরীক্ষার মাধ্যমে কখনো ১৮ শতাংশ, ২২ শতাংশ, ১৭ শতাংশ, ২০ শতাংশ পাস করিয়ে সনদ দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এদের কাউকে বঞ্চিত করা হবে- এ রকম কোনো কথা তখন বলা হয়নি। পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিলো বয়সের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই এবং ৪০ নম্বর অর্জন করলে নিয়োগযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে। তবে কেনো আমাদেরকে এখন মেধাহীন বলা হচ্ছে, যোগ করেন তিনি।
নীলিমা চক্রবর্তী বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিলো যখন আমরা সনদ লাভ করেছি, জাতীয় মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছি, যেকোনো সময়ে নিয়োগ আমাদের অবশ্যই হবে। কিন্তু আজকে নির্মম পরিহাস এই যে, আমাদের প্রত্যাশা, আশা-আকাঙ্ক্ষা মূল্যই এনটিআরসি’র কাছে নেই। ১ থেকে ১২তম ব্যাচের সকল নিয়োগ বঞ্চিত নিবন্ধন সনদধারীদের শর্তহীনভাবে সরাসরি নিয়োগ পাবার অধিকার রাখে। আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহায় এবং মানবেতর অবস্থায় জীবনযাপন করছি। এর ফলে আমরা নিয়োগবঞ্চিতরা জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু কন্যা, মানবতার মা, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
চেয়ারম্যানের আশ্বাসে রাজপথ ছাড়লেন অবরোধকারীরা
বিকেলে অবরোধকারীরা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেন। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা অবশেষে চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মো. সাইফুল্লাহিল আজমের ‘আশ্বাসে’ রাজপথ ছেড়ে এদিনের মতো আন্দোলনের ইতি টানেন।
চেয়ারম্যান মো. সাইফুল্লাহিল আজম আন্দোলনরতদের দাবির বিষয়টি সরকারে উচ্চমহলে জানাবেন এবং একটি প্রতিনিধিদলকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেবেন-এমন আশ্বাস পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন সংগঠনের কয়েকজন।
স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যস্থতায় চেয়ারম্যানের সাক্ষাতের সুযোগ পান আন্দোলনরতদের মধ্যে চারজন নেতা। তারা প্রায় দুইঘণ্টা পর বেরিয়ে এসে আন্দোলনকারীদের রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেন।
আইন না সমঝোতা?
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় আইনগতভাবে এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগবঞ্চিত শিক্ষক ফোরামের ব্যানারে আন্দোলনকারীদের চাকরি পাওয়ার সুযোগ কম। তাই সমঝোতা করেই তাদের চাকরির এ দাবি আদায় করতে হবে।
নিয়োগের ঘোষণা দাবিতে নিয়োগবঞ্চিত শিক্ষক ফোরাম প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন। কর্মসূচি চলাকালে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার সহায়তায় চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান তারা। দীর্ঘসময় আলোচনা শেষে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানের আশ্বাসও পান।
পরে নিবন্ধিত নিয়োগবঞ্চিত শিকক্ষ ফোরামের সভাপতি নীলিমা চক্রবর্তী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানের আন্তরিকতায় আমরা খুবই খুশি।
তিনি বলেন, চেয়ারম্যান আমাদের দুইটা উপায় দিয়েছিলেন-আইন না সমঝোতা। সমঝোতা করলে তিনি আমাদের দাবি আদায়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন ঈদের পরে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের নিয়ে বসবেন এবং দাবিগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবেন, যোগ করেন নীলিমা।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।