দৈনিক শিক্ষাডটকম, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুলী ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে মাত্র একজন শিক্ষার্থী আছেন। ওই শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন চারজন। অভিযোগ রয়েছে, আশানুরূপ শিক্ষার্থী না থাকায় বিজ্ঞান বিভাগে কর্মরত শিক্ষকেরা নিয়মিত কলেজে আসেন না। এলেও হাজিরা দিয়েই চলে যান তাঁরা।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির কার্যক্রম চালুর মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে মুশুলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের। পরে পৃথক ভবনে কলেজ শাখা স্থানান্তরিত হওয়ার পর নামকরণ করা হয় মুশুলী ডিগ্রি কলেজ। ব্যবসায়, মানবিক ও বিজ্ঞান শাখায় কর্মরত আছেন মোট ১৬ জন শিক্ষক। চলতি বছর মানবিক বিভাগে প্রথম বর্ষে ৩০৪ জন, ব্যবসায় শাখায় তিনজন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। অন্যদিকে বিজ্ঞান শাখায় কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগের পাঠদানের জন্য শিক্ষক বরাদ্দ রয়েছে চারজন। বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে মাত্র একজন ছাত্র আছেন। বিগত বছরগুলোয় এই কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে চার-পাঁচজনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি বলে কলেজ সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের দুই শিক্ষার্থী জানান, বিজ্ঞান বিষয়ে কলেজের প্রথম বর্ষে কোনো শিক্ষার্থী নেই। তাই ক্লাস হয় কি না—সেটি তাঁরা জানেন না। শিক্ষকেরা নিয়মিত কলেজে এলেও হাজিরা দিয়েই চলে যান। আবার কেউ কেউ অফিসে বসেই সময় পার করেন।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আশরাফ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে কর্মরত আছেন মোট ১৬ জন শিক্ষক। অন্যান্য কলেজের মতো এই কলেজেও অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এখানে বিজ্ঞানের সব বিষয়ের শিক্ষক থাকলেও শিক্ষার্থীর অভাব।
কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, ‘মূলত গ্রামে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কম থাকে। দু-একজন থাকলেও তারা এসএসসি পাস করার পর গ্রামের কলেজগুলোতে ভর্তি না হয়ে শহরের কলেজে চলে যায়। গ্রামের কলেজগুলো বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী না পাওয়ার এটাই বড় কারণ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রওশন আরা খান বলেন, কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের প্রতিটি শাখায় একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকতে হয়।
মুশুলী ডিগ্রি কলেজে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী না থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রওশন আরা বলেন, ‘গত বুধবার এ-সংক্রান্ত একটি মিটিং হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’