দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে তিনদিন ব্যাপী সপ্তম আইএইচএসএ 'পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে মানবতাবাদ' বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষ হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিটেরিয়ান স্টাডিজ অ্যাসোসিয়েশন (আইএইচএসএ) এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্সের (এসআইপিজি) সেন্টার ফর পিস স্টাডিজের (সিপিএস) সহযোগিতায় ৫ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ৯০ জন আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিসহ প্রায় ১৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। রোববার এনএসইউ কর্তৃপক্ষের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে মানবতাবাদ, শান্তি এবং সংঘাতের যোগসূত্র খুঁজে বের করতে এই সম্মেলন বিশেষজ্ঞরা একত্রিত হন। মানবিক বিভিন্ন বিষয় অধ্যয়নের ক্ষেত্রে সংলাপ এবং আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সম্মেলনের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল গাজায় চলমান সহিংসতা এবং মানবিক সংকটকে কেন্দ্র করে একটি গোলটেবিল আলোচনা। আইএইচএসএ এবং এসআইপিজি, এনএসইউ-এর সিপিএস এই গোলটেবিল বৈঠকে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্থদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে এবং বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা জানায়। বিবৃতিতে ইসরায়েলি রাষ্ট্র ও সামরিক বাহিনী কর্তৃক আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের (আইএইচএল) গুরুতর লঙ্ঘনের উপর জোর দেয়া হয়েছে, বিশেষত ১৯৪৯ সালের জেনেভা কনভেনশনের কথা উল্লেখ করা হয়।
সম্মেলনে বিবৃতিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) রেজুলেশন ২৪১৭ মেনে চলার গুরুত্বের উপরও জোর দেয়া হয়, যা যুদ্ধের অস্ত্র হিসাবে ক্ষুধাকে ব্যবহারে নিন্দা প্রকাশ করে এবং মানবিক সহায়তার যেকোন অবরোধ আন্তর্জাতিক হিউম্যানিটেরিয়ান আইনকে (আইএইচএল) ভঙ্গ করে। বিবৃতিতে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য অবিলম্বে সহায়তা ও সুরক্ষায় প্রবেশাধিকারের আহ্বান জানানো হয় এবং আইএইচএল-এর অধীনে ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলিতে দখলদার শক্তি হিসাবে ইসরায়েলের দায়িত্বের উপর জোর দেয়া হয়।
গাজা পরিস্থিতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করার বাইরে, সম্মেলনে বৈশ্বিক এবং স্থানীয় পর্যায়ে নীতি, শিক্ষা ও অর্থনীতির সঙ্গে মানবিক প্রয়াস কীভাবে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। সরাসরি এবং অনলাইন উভয় প্রকার অংশগ্রহণ এই সম্মেলনকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছিল।
একাডেমিক স্বাধীনতাকে খর্ব করে এমন যেকোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় হিউম্যানিটেরিয়ান স্টাডিজ স্কলারদের প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে সত্যকে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে কনফারেন্সটি শেষ হয়। বিবৃতিতে বৈষম্যমূলক ভাষা ও আখ্যান ব্যবহারের নিন্দা জানানো হয়েছে যা অমানবিকতা ও মেরুকরণকে উত্সাহিত করে এবং বৈশ্বিক মানবিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্মান, মর্যাদা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।