এনটিআরসিএর ইতিহাসে এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় পাস করানো হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় ভাইভায় প্রতিদিন ডাকা হচ্ছে কম সংখ্যক পরীক্ষার্থী। ভাইভা বোর্ডের সংখ্যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় মাত্র দুটো বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রায় ছয় মাস লেগে যাবে শুধু ভাইভা নিতেই। এমন অভিযোগ প্রার্থীদের। আর ভাইভার এই দীর্ঘসূত্রিতায় চক্রাকারে পিছিয়ে যেতে পারে চূড়ান্ত বাছাইয়ের ফল প্রকাশ ও নিয়োগের সুপারিশ এবং যোগদান। বয়সের জটিলতায় পড়ে যাবেন অনেক শিক্ষক প্রার্থী। প্রতিদিন দুইব্যাচে একবেলায় ৬/৭শ প্রার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। বেলা একটা থেকে দুইটার মধ্যে ভাইভা শেষ হয়। যদিও প্রার্থীরা দ্রুত ভাইভা শেষ করার বিষয়ে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র প্রিন্ট জাতীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছেন শুরু থেকেই। এমন প্রেক্ষাপটে দৈনিক আমাদের বার্তার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে। গতকাল রোববার একান্ত আলাপচারিতায় শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের বার্তাকে জানান, ‘প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও শিক্ষকতার মহান পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করার মানসিকতাসম্পন্ন প্রার্থীদের দ্রুততার সঙ্গে বাছাই করতে ভাইভায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার নির্দেশনা দেওয়া হবে।’
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড আর শিক্ষকরা সেই মেরুদণ্ড তৈরির কারিগর। শিক্ষক হিসেবে যারা নিয়োগ পাবেন তাদের ব্যক্তিত্ব, সততা, রুচিশীলতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। স্বল্প আয়ে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকাই তাদের জন্য দুঃসাধ্য, শিক্ষকতায় তারা কিভাবে মনোযোগ দেবেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা ইঙ্গিত দেন, ভাইভা বোর্ডের সংখ্যা বাড়ানো এবং সরকারি হাইস্কুল ও কলেজে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের বোর্ডে রাখার বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হবে।
অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা গত ২৭ অক্টোবর শুরু হয়। মোট দশটি বোর্ডে দুই ব্যাচে প্রায় সাতশ জন ভাইভায় অংশ নিচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রথম ব্যাচের পরীক্ষা সকাল সাড়ে ৯টায় ও দ্বিতীয় ব্যাচের পরীক্ষা বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয়।
মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীকে অবশ্যই সব শিক্ষা সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট, এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদ ও লিখিত পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড সঙ্গে আনতে হয়। যেহেতু এবার ভাইভার জন্য পৃথক প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি, তাই লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্রই মৌখিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র হিসেবে গণ্য হয়।
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মোট ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন প্রার্থী ভাইভায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন।
এনটিআরসিএ আইন অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলে (প্রভাষক, সহকারি শিক্ষক) শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত একমাত্র প্রতিষ্ঠান বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ।