দিন দিন বেড়েই চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির বিস্তৃতি। দৈনন্দিন নানা কাজে বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার হচ্ছে এ উদীয়মান প্রযুক্তি। এবার সামনে এলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’র জেলখানার ধারণাও।
নতুন এ ধারণা প্রকাশ করেছেন ইয়েমেনের অণুজীববিজ্ঞানী হাশেম আল-ঘাইলি। প্রযুক্তি সাইট ওয়্যায়ার্ডকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, প্রথাগত জেলখানার বদলে একটি ভার্চুয়াল কারাগার তৈরি করা সম্ভব।
আল-ঘাইলি একটি নতুন স্নায়বিক কারাগার ব্যবস্থার প্রস্তাব করছেন, যাকে তিনি ‘কগনিফাই’ বলছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেট।
নিজের ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামে তার এ ভার্চুয়াল কারাগারের একটি প্রস্তাবিত ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন তিনি, যা একেবারে ‘ভয়ংকর’ বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
‘কগনিফাই’ কী করবে?
এ ব্যবস্থায় বন্দীদের দীর্ঘ সময়ের জন্য আটকে রাখার পরিবর্তে তাদের ভার্চুয়াল পরিবেশে কৃত্রিম স্মৃতি দেখানো হবে। এ ব্যবস্থাটি এআইয়ের মাধ্যমে কাস্টমাইজড স্মৃতি তৈরি করবে, যা একজন বন্দীর মস্তিষ্কে পাঠানো হবে। পাশাপাশি, স্মৃতি গঠনে কাজ করা ডিএনএ এবং আরএনএ-এর অংশেও এ তথ্য পাঠানো হবে যে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতির প্যাটার্ন তৈরি করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট।
বর্তমানে এ ধরনের প্রযুক্তি নেই। আর, এখন পর্যন্ত কগনিফাই কেবল একটি ধারণা।
তবে, আল-ঘাইলি বলছেন, প্রাণীদের ওপর পরীক্ষাগুলো প্রমাণ করে এ প্রক্রিয়া সম্ভবত মানুষের ওপরও কাজ করবে।
উদাহরণ হিসেবে, মার্চ মাসে নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত, ইঁদুরের ওপর করা এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, স্মৃতি সম্ভবত ডিএনএ-এর ভাঙাগড়ার ওপর নির্ভর করেই গঠন হয়।
এ ব্যবস্থা বাস্তবে কার্যকর করার আগে অবশ্যই নৈতিক দিক থেকে এর অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। আল-ঘাইলি মনে করছেন, কগনিফাই এখন থেকে এক দশকের মধ্য বাস্তবে রূপ নিতে পারে।
“তবে, এটি শুধু তখনই সম্ভব, আমরা যদি নৈতিক বিধিনিষেধগুলো কাটিয়ে উঠতে পারি, যা এ ধরনের প্রযুক্তির পরীক্ষাকে সীমাবদ্ধ করে।
হরর-অ্যান্থোলজি ঘরানার মুভি-সিরিজের যারা ভক্ত, তারা সম্ভবত এমন ধারণার সঙ্গে আগে থেকেই পরিচিত। উদাহরণ হিসেবে, ৯০ দশকের জনপ্রিয় সাই-ফাই সিরিজ ‘দ্য আউটার লিমিটস’-এ ডেভিড হাইড পিয়ার্স অভিনীত একজন বিজ্ঞানী এ ধরনেরই ভার্চুয়াল কারাগার তৈরি করেন, যা কয়েক মিনিটের মধ্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অনুকরণ করতে পারে। সিরিজের ভেতর ওই বিজ্ঞানী নিজের ওপরই পরীক্ষা চালান; যা তাকে বিশ্বাস করায়, তিনি হত্যাকারী এবং তার গোটা জীবন কারাগারে কেটে গেছে।