বাংলাদেশি প্রত্নতাত্ত্বিক, ইসলামী শিল্পকলা বিশেষজ্ঞ ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির খ্যাতিমান বিশ্লেষক এবিএম হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তার পুরো নাম আবুল বাশার মোশারফ হোসেন। কিন্তু এবিএম হোসেন নামে তিনি বেশি পরিচিত।
এবিএম হোসেন ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার দেবীদ্বারের ধামতী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দেবীদ্বার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে মেধাবৃত্তি নিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে সেখান থেকে এমএ এবং ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে ইতিহাস ও ইসলামী শিল্পকলায় পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
এবিএম হোসেন ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পূর্ণ অধ্যাপক হন। তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং কলা অনুষদের ডীন ছাড়াও আরো বেশ কিছু প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন কমিটিতেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নরওয়েজীয় নোবেল কমিটির সদস্য মনোনীত হন।
২০০১ খ্রিষ্টাব্দে অবসর গ্রহণের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তিনি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ইমেরিটাস অধ্যাপক। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি তাকে ফেলোশিপ প্রদান করে। এছাড়া বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির তিনি আজীবন সদস্য ছিলেন।
এবিএম হোসেন অন্তত ১১টি গ্রন্থ রচনা করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস: অটোম্যান সাম্রাজ্য থেকে জাতিসত্ত্বা রাষ্ট্র,বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সমীক্ষামালা - ২: স্থাপত্য ,আরব স্থাপত্য, ইসলামী চিত্রকলা।
এবিএম হোসেন ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।