ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে যে বা যারাই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ।
শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর ডিবি কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
হারুন অর রশিদ বলেন, আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে যে বা যারাই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রয়োজনে সিয়ামকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভারতে যাবে ডিবি।
এর আগে গত ২৬ মে আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে কলকাতায় যায় ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
এরপর সিয়ামকে নেপালে আটকের খবর পেয়ে ১ জুন সেখানে উড়ে যান ডিবির হারুন। ৪ জুন নেপাল থেকে ফিরে শাহজালাল বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে নেপালের চুক্তি রয়েছে। ভারতীয় পুলিশের কাছে সিয়ামকে দিলেও হবে। কারণ তাকে নিয়ে আলামত উদ্ধারসহ তদন্তকে এগিয়ে নেয়া সহজ হবে।’
বর্তমানে সিয়াম হোসেন কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের (সিআইডি) হেফাজতে রয়েছে। শুক্রবার (৭ জুন) ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আনার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সিয়াম নেপালে পালিয়ে ছিলেন। পরে তাকে নেপাল পুলিশ আটক করে। কলকাতার সিআইডি তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন আনোয়ারুল আজিম।
বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পাশের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।
হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার অভিযোগে গ্রেফতার সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাহাজি ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে দুদফা রিমান্ডে নেয়া হয়। আর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদকে ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বারাসাতের আদালত।
এছাড়া বর্তমানে কলকাতা পুলিশের হেফাজতে থাকা সিয়ামের বিরুদ্ধে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আমানের সহযোগী সাইফুল মেম্বারকেও রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহম্মেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে ৬ জুন আটক করেছে ডিবি।