এমসি কলেজে গৃহবধূকে ধর্ষ*ণের বিচার বন্ধ - দৈনিকশিক্ষা

এমসি কলেজে গৃহবধূকে ধর্ষ*ণের বিচার বন্ধ

দৈনিকশিক্ষাডটকম, সিলেট |

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগের আট নেতার বিরুদ্ধে করা দুই মামলার বিচার বন্ধ হয়ে আছে। আলোচিত এ মামলার বিচারে দীর্ঘদিন কোনো অগ্রগতি নেই। দুটি মামলার বিচার একসঙ্গে করার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় তিন বছর ধরে বিচার বন্ধ হয়ে আছে নিম্ন আদালতে। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন। তারা সবাই ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় ৫১ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে স্বামীকে নিয়ে শাহপরাণ মাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন নির্যাতনের শিকার তরুণী। ফেরার সময় তারা গাড়ি থামিয়েছিলেন নগরের টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে। স্ত্রীকে প্রাইভেটকারে রেখে স্বামী পার্শ্ববর্তী দোকানে গিয়েছিলেন। ওই সময় প্রাইভেটকারটি ঘিরে ধরেন কয়েকজন তরুণ। প্রাইভেটকারসহ ওই দম্পতিকে তারা নিয়ে যান বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ভেতরে। সেখানে স্বামীর সামনেই গাড়ির ভেতর সংঘবদ্ধভাবে তরুণীকে ধর্ষণ করেন ছয় তরুণ। পরে তাদের মারধর করে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেন তারা। আটকে রাখে তাদের গাড়িও। ঘটনার রাতেই নির্যাতিতার স্বামী নগরীর শাহপরাণ থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দুটি মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামিসহ সন্দেহভাজন আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব ও পুলিশ। পরে একই বছরের ৩ ডিসেম্বর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। পরে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় ৫১ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় তাদের মধ্যে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ও মাহফুজুরকে ধর্ষণে সহায়তা করতে অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন। তারা সবাই ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।

অন্যদিকে, এ ঘটনায় করা চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলাটি সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচার চলছিল। এরপর ন্যায়বিচারের স্বার্থে বাদীপক্ষের করা এক আবেদনে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এ ঘটনায় করা মামলা দুটির বিচার কার্যক্রম একসঙ্গে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে করার আদেশ দেন। পরে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলা দুটি চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক বিবেচনায় নিয়ে তা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সিলেটের জেলা প্রশাসকের (জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের) নেতৃত্বে গঠিত মনিটরিং কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় থেকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়েও চিঠি লেখা হয়। তবে ওই সিদ্ধান্তের কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। এমনই এক পরিস্থিতিতে বাদীপক্ষ মামলা দুটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের নির্দেশনা চেয়ে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করে। ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলা দুটি অনতিবিলম্বে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।

এ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মামলা দুটির বিচার দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে আাছে, যা দুঃখজনক। তবে এ মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামিই কারাগারে আছেন। এ ছাড়া তারা সবাই এ ঘটনায় জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। ডিএনএ টেস্টের ক্রস ম্যাচিংয়ে প্রমাণ মিলেছে। বিলম্বে বিচার হলেও একদিন এ মামলার আসামিরা সাজা পাবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি।’

এ মামলায় বাদীপক্ষে উচ্চ আদালতের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন বলেন, হাইকোর্ট অনতিবিলম্বে মামলা দুটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করতে বলেন। তবে ওই আদেশের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করেছে। সরকারপক্ষের করা লিভ টু আপিল আপিল বিভাগে বিচারাধীন। এ কারণে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দুটির আর বিচার হচ্ছে না। সব কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে আছে।

চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ - dainik shiksha চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ ঢামেকে একজনের মৃত্যু - dainik shiksha ঢামেকে একজনের মৃত্যু জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ - dainik shiksha জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ - dainik shiksha বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর - dainik shiksha শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের - dainik shiksha সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো - dainik shiksha যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.012538909912109