দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: বিখ্যাত মার্কিন কবি এমিলি এলিজাবেথ ডিকিনসন এর আজ মৃত্যুবার্ষিকী। তার জীবদ্দশা সম্পর্কে খুব বেশি জানা না গেলেও তাকে মার্কিন কবিতার ইতিহাসে একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণ করা হয়।
এমিলি ১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব অঙ্গরাজ্য ম্যাসাচুসেটসের অ্যামহার্স্ট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বেশিরভাগ জীবন একাকী, নিঃসঙ্গ অবস্থায় কেটেছে। সাত বছর অ্যামহার্স্ট অ্যাকাডেমিতে পড়ার আগে তিনি মাউন্ট হোলিয়োক নারী সেমিনারিতে ভর্তি হন। পরে তার জন্মস্থল অ্যামহার্স্টে চলে আসেন। স্থানীয়দের কাছে তিনি একটু অদ্ভুত স্বভাবের ব্যক্তি ছিলেন। সাদা পোশাকের প্রতি তার ঝোঁকটা বেশি ছিলো। অতিথিদের আপ্যায়ন করতে সামনে আসতেন না, জীবনের শেষ সময় তিনি তার শয়নকক্ষ ছেড়ে দেন। তিনি কোনো দিন বিয়ে করেননি, বন্ধুবান্ধবের সংখ্যাও ছিলো অতি নগণ্য। জীবনের শেষ সময় তিনি একাকী কাটান।
ডিকিনসন অনেক কবিতা লিখতেন, কিন্তু সেগুলো খুব কমই প্রকাশ পেত। তার রচিত প্রায় ১৮০০ কবিতার মধ্যে মাত্র এক ডজনও প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু তার যে সৃষ্টিকর্মগুলো প্রকাশিত হয়, তখনকার পদ্যের রীতি প্রচলন অনুযায়ী প্রকাশকরা অনেক পরিবর্তন এনেছিলো। তার কবিতার ধরন ছিল ব্যতিক্রমী: শিরোনামবিহীন, ছোট ছোট বাক্য দিয়ে সাজানো,আর এগুলোতে অনেক সময় তির্যক অর্থ প্রকাশ পেতো। এছাড়া এমিলি নিজের মতো করে কিছু যতিচিহ্ন ও বর্ণ ব্যবহার করতেন। তার কবিতার মধ্যে মৃত্যু এবং অমরত্ব এই দু'টি ভাবের প্রকাশ ঘটতো। এমনকি বন্ধুদেরকে চিঠি লেখার সময়ও সেই দুইটি ভাব লক্ষণীয় ছিলো।
ডিকিনসনের পরিচিতদের অনেকেই তার লেখালেখি সম্পর্কে জানতেন, কিন্তু কেবল তার মৃত্যুর পরেই ছোট বোন লাভিনিয়া রচনাকর্মগুলোর সিংহভাগ খুঁজে পান। তার প্রথম কবিতা ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দে টমাস ওয়েটভর্থ হগিনসন এবং মেবেল লুমিস টডদের দ্বারা ছাপা হয়, কিন্তু সেগুলো অনেক সম্পাদনা করা হয়। টমাস এইচ জনসন কোনো ধরনের সম্পাদনা ছাড়া তার কবিতাগুলো ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘দ্য পোয়েমস অব এমিলি ডিকিনসন’ শিরোনামের একটি সংকলনে প্রকাশ করেন। উনিশ শতকে, এমনকি বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের আগেও ডিকিনসনের প্রতিভার সমাদর না করা হলেও তিনি এখন সারা বিশ্বে অন্যতম একজন কবি হিসেবে স্বীকৃত। নিঃসঙ্গ এই কবি ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করেন।