সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়া মোট ৩৩৩ জন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। তাতে দেখা গেছে, ৩২৫ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ১৩২ জনই মাধ্যমিক পাস করেননি।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে সুজন। এতে দেখা যায়, প্রতিদ্বন্দ্বী আট মেয়র প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনই স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। ২৪৬ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৯২ জন মাধ্যমিক পাস করেননি। স্নাতকোত্তর রয়েছেন মাত্র ২১ জন। আর সংরক্ষিত ৭৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বী নারী কাউন্সিলরের মধ্যে ৪০ জনই মাধ্যমিক পাস করেননি। স্নাতকোত্তর রয়েছেন আটজন। মোট প্রার্থীর ২৯ দশমিক ৭৩ শতাংশই বিভিন্ন মামলার আসামি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আটজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে দুজনের (২৫ শতাংশ) বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা আছে। এই দুজন হলেন জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম।
২৪৬ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৮৪ জনের (৩৪.১৫ শতাংশ) বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা রয়েছে, ৪২ জনের (১৭.০৭ শতাংশ) বিরুদ্ধে অতীতে মামলা ছিল।
সংরক্ষিত আসনের ৭৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৩ জনের (১৬.৪৬ শতাংশ) বিরুদ্ধে বর্তমানে ফৌজদারি মামলা আছে এবং তিনজনের (৩.৮০ শতাংশ) বিরুদ্ধে অতীতে ফৌজদারি মামলা ছিল।
মেয়র এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগের পেশা ব্যবসা। মেয়র পদে তিনজন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৯২ জন পেশা হিসেবে ব্যবসা উল্লেখ করেছেন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৭৯ জনের মধ্যে ৩৯ জন গৃহিণী।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে একটা বড় রাজনৈতিক দল অংশ না নেয়ায় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলেও গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কিছুটা ঝাঁকুনি খাবে।
তিনি আরও বলেন, একজন প্রার্থীর কী যোগ্যতা তার পুরোপুরি তথ্য একজন ভোটারের জানা উচিত। এ ক্ষেত্রে একজন ভোটার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উপযুক্ততা নির্ণয় করতে পারেন। নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচিত ব্যক্তিকে অবশ্যই তার জবাবদিহি, যোগ্যতা, স্বচ্ছতা এবং জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হয়। সেসব বিষয় নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও ভোটারকে প্রার্থীর তথ্য জানতে হবে।
সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের যে প্রত্যাশা আমাদের ছিল, তা পূরণ না হলেও যেসব দল এবং প্রার্থীরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারা সবাই যেন নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্টদের কাছে সমান সুযোগ পান।