দৈনিক শিক্ষাডটকম, এনামুল হক প্রিন্স: এ বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। রোববার প্রকাশিত ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১টি শিক্ষাবোর্ডের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার ছাত্রদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ছাত্রীদের ৮৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছেন মোট ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রীর সংখ্যা ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন, আর ছাত্র ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন। এবারও পাসের হার ও জিপিএ-৫ উভয় ক্ষেত্রেই ছাত্রীরা ছাত্রদের চেয়ে এগিয়ে থাকার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন।
আগের বছর বা ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে সব বোর্ড মিলে গড় পাসের হার ছিলো ৮০ দশমিক ৩৯। সে হিসেবে এবার পাসের হার বেড়েছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ ভাগ। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮। এবার পাসের হার বাড়লেও জিপিএ-৫ আগের বছরের চেয়ে ১ হাজার ৩৪৯টি কমে গেছে।
এবার বিদেশি কেন্দ্র থেকে পাস করেছেন ২৯৮ জন শিক্ষার্থী। ৫১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থীই পাস করতে পারেননি। আর ২ হাজার ৯৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাসের হার শতভাগ।
রোববার সকালে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরা। গণভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহারসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা। পরে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী বিস্তারিত জানান।
এবার নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এসএসসিতে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ছাত্রদের পাসের হার ৮২ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও ছাত্রীদের ৮৫ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছেন মোট ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭৪ হাজার ৬৭৭ ও ছাত্রী ৮৯ হাজার ১৬৮ জন।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ছেলেদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ১৯ শতাংশ ও মেয়েদের ৮৮ দশমিক ০৩ শতাংশ। কারিগরিতে মোট পাস করেছেন ৯৯ হাজার ৭২১ শিক্ষার্থী। ফেল করেছেন ২২ হাজার ৮১৭ জন শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৮ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ১ হাজার ৯৩৭ ও ছাত্রী ২ হাজার ১৪১ জন।
মাদারাসা শিক্ষা বোর্ডে এবার পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ছেলেদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ও মেয়েদের পাসের হার ৮০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। মোট পাস ২ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৪ জন শিক্ষার্থী। মাদরাসায় ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৭ হাজার ৯১১ জন। জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ১৪ হাজার ২০৬ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ৭৩৯ ও ছাত্রী ৭ হাজার ৪৬৭ জন।
নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৯২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৮৫ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ ও দিনাজপুর বোর্ডে ৭৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ পাস করেছেন।
নয়টি বোর্ডে মোট পাস করেছেন ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৭৮ শিক্ষার্থী। যার মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ২৩ হাজার ৮৫৩ ও ছাত্রী ৭ লাখ ২১ হাজার ৮২৫। ফেল করেছেন ২ লাখ ৬০ হাজার ৭১৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৬৫ ও ছাত্রী ১ লাখ ২৭ হাজার ২৫১ জন।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি বোর্ড মিলিয়ে মোট পাস করেছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে ছাত্র ৮ লাখ ৬ হাজার ৫৫৩ ও ছাত্রী ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৬০০ জন। ফেল করেছেন তিন লাখ ৪১ হাজার ৪৪৪ জন। এর ভেতর ছাত্রী ১ লাখ ৫৯ হাজার ২০৩ ও ছাত্র ১ লাখ ৮২ হাজার ২৪১ জন। পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ২৩ হজার ৬৪৫ জন। যার মধ্যে ছাত্র ১০ হাজার ৬২৩ ও ছাত্রী ১৩ হাজার ২২ জন। ফরম পূরণ করেছিলো ২০ লাখ ৩৭ হাজার ২৪২ শিক্ষার্থী। যার মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৪১৭ ও ছাত্রী ১০ লাখ ৩৭ হাজার ৮২৫। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৪ ও ছাত্রী ১০ লাখ ২৪ হাজার ৮০৩ জন। এবার ৩ হাজার ৭৯৯ কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৮৬১ প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
এবার নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ফরম পূরণ করেছিলো ১৬ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৪ জন। যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৩৫ ও ছাত্রী ৮ লাখ ৫৭ হাজার ৪২৯ জন। পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেছিলেন ১৬ লাখ ৬ হাজার ৩৯৪ জন। এর ভেতর ছাত্র ৭ লাখ ৫৭ হাজার ২১৮ জন ও ছাত্রী ৮ লাখ ৪৯ হাজার ১৭৬ জন। পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ১২ হাজার ৯৭০ জন। যার মধ্যে ছাত্র ৪ হাজার ৭১৭ ও ছাত্রী ৮ হাজার ২৫৩ জন। নয় বোর্ডে ২ হাজার ২৭২ কেন্দ্রে ১৯ হাজার ৯১৩ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো।
কারিগরি বোর্ডে ফরম পূরণ করেছিলো মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৮ জন। যার মধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজার ৯১৬ ও ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৭২ জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো ১ লাখ ২২ হাজার ৫৩৮ জন। যার মধ্যে ছাত্র ৯২ হাজার ১৬৯ ও ছাত্রী ৩০ হাজার ৩৬৯। অনুপস্থিত ছিলেন ৩ হাজার ৯৫০ জন। যার মধ্যে ছাত্র ২ হাজার ৭৪৭ ও ছাত্রী ১ হাজার ২০৩ জন। কারিগরিতে ৭০৯ কেন্দ্রে ২ হাজার ৮৭৭ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো।
মাদরাসা বোর্ডে ফরম পূরণ করেছিলেন মোট ২ লাখ ৯১ হাজার ৩৯০ জন। তার মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৬৬ ও ছাত্রী ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৪ জন। পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেছিলেন ২ লাখ ৮৪ হাজার ৬৬৫ জন। যার মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪০৭ ও ছাত্রী ১ লাখ ৪৫ হাজার ২৫৮ জন। অনুপস্থিত ছিলেন ৬ হাজার ৭২৫ জন। এর ভেতর ছাত্র ৩ হাজার ১৫৯ ও ছাত্রী ৩ হাজার ৫৬৬ জন। মাদরাসা বোর্ডে ৮১৮ কেন্দ্রে ৯ হাজার ৯৭১ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
করোনার অভিঘাতে অটোপাস, সংক্ষিপ্ত সিলোবাসসহ নানা বিষয়ে ছাড় দিতে হয়েছে গত কয়েকবছরের পাবলিক পরীক্ষায়। কয়েক বছরের ব্যবধানে এবার পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।