প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক বশীর আল-হেলালের জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামের মীরপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময়েই জড়িয়ে পড়েন ছাত্ররাজনীতি ও কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির সঙ্গে। এ সময় থেকেই লেখালেখি করতেন। সে সময়ই কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্পের বই ‘স্বপ্নের কুশীলব’। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় বিভাগে বাংলায় এমএ পাস করে চাকরি নেন কলকাতায় হজ কমিটিতে। তখন কলকাতা থেকে মুসলমানদের জন্য একটি পত্রিকা বের হতো। হজ কমিটিতে চাকরির পাশাপাশি তিনি এই পত্রিকায়ও কাজ করতেন।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে মাকে নিয়ে চলে আসেন ঢাকা। ঢাকায় আসার পর ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন এবং ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের শুরুতে সহকারী পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন বাংলা একাডেমিতে। প্রায় চব্বিশ বছরের কর্মজীবন বাংলা একাডেমিতে কাটিয়ে ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে পরিচালক পদে দায়িত্ব শেষে অবসর গ্রহণ করেন। গ্রামীণ ও শহুরে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনকে আরো অর্থবহ করতে জীবনধর্মী ও সমাজ সচেতনতামূলক ছোটগল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। অসংখ্য গল্প লিখেছেন। প্রকাশিত গল্পের বইয়ের মাঝে রয়েছে- ‘প্রথম কৃষ্ণচূড়া’, ‘আনারসের হাসি’, ‘বিপরীত মানুষ’, ‘ক্ষুধার দেশের রাজা’, ‘গল্পসমগ্র-প্রথম খণ্ড’। প্রকাশিত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- ‘কালো ইলিশ’, ‘ঘৃতকুমারী’, ‘শেষ পানপাত্র’, ‘নূরজাহানদের মধুমাস’, ‘শিশিরের দেশে অভিযান’ ও ‘যে পথে বুলবুলিরা যায়’।
বাংলা একাডেমি থেকে অবসর নেয়ার পর বিভিন্ন পত্রিকায় রাজনৈতিক কলাম লেখা শুরু করেন বশীর আল-হেলাল। এক ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকাতেই তার ১৬৫টি নিবন্ধ ছাপা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য পত্রিকাতেও তার বেশ কয়েকটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।
সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-আলাওল সাহিত্য পুরস্কার-১৯৯১, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-১৯৯৩, লেখিকা সংঘ পুরস্কার, গৌরী ঘোষাল স্মৃতি সম্মান পুরস্কার-২০০২ কলকাতা এবং অধ্যাপক আবুল কাশেম পুরস্কার-২০০৪। প্রখ্যাত এই কথাসাহিত্যিক ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।