কবজিবিহীন দুই হাতে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছেন আশুলিয়ায় বেপজা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। তার এ কৃতিত্বে দারুণ খুশি শিক্ষকসহ প্রতিবেশীরা।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জান্নাতুল ফেরদৌসের মা নিলুফা বেগম।
জানা গেছে, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ জানুয়ারি আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় ভাড়া বাসার ছাদে বিদ্যুৎ সঞ্চালক তারে জড়িয়ে জান্নাতুলের দুই হাত পুড়ে যায়। পরে তার হাতের কবজি দুটি কেটে ফেলা হয়। এরপর থেকে তিনি কবজিবিহীন হাতে পড়াশোনা চালিয়ে যান। এর আগে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন জান্নাতুল। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন তিনি।
জান্নাতুলের শিক্ষাজীবনের পথচলা মসৃণ ছিল না। বাবা জাহাঙ্গীর আলম তার মাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র চলে যান। সেই থেকে অভাব-অনটন বাসা বাঁধে তাদের ঘরে। প্রায় বন্ধ হয়ে যায় লেখাপড়া। পরে বিষয়টি স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নজরে আসলে জান্নাতুলের পড়াশোনার দায়িত্ব নেন তিনি।
জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমার স্বপ্ন ডাক্তার হওয়া। আমি ডাক্তার হয়ে সবার সেবা করতে চাই। অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমার বাবা না থাকায় মা অনেক কষ্ট করে পড়াচ্ছেন। তার একার পক্ষেও সম্ভব না। বড় খালাও আমাদের অনেক সহযোগিতা করেন। বর্তমানে তাদের সঙ্গেই থাকি। খালা-খালুই আমার দেখাশোনা করেন।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় অনেকে আমাদের সাহায্য-সহযোগিতার কথা বলে শুধু ছবিই তুলেছেন, বাস্তবে তারা এগিয়ে আসেননি। শুধু ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম কথা রেখেছেন। পড়ালেখার জন্য যখন যা চেয়েছি তাই দিয়েছেন। যে ভাবেই হোক আমি ডাক্তার হতে চাই।