দৈনিক শিক্ষাডটকম, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মাদরাসায় তালা লাগানোর অভিযোগ উঠেছে এক পক্ষের বিরুদ্ধে। এতে ছয় দিন ধরে মাদরাসাটি বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের আনোয়ারপুর শাহেদীয়া ফয়জুল উলুম কওমী মাদরাসায়।
মাদরাসার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় লোকজন জানান, আনোয়ারপুর শাহেদীয়া ফয়জুল উলুম কওমী মাদরাসা ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর থেকে স্থানীয় অভিভাবকেরা ইসলামি শিক্ষা দেওয়ার জন্য মাদরাসায় সন্তানদের ভর্তি করাতে শুরু করেন। প্রতিষ্ঠানটিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগের মোট ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। পাঠদানের জন্য শিক্ষক রয়েছেন তিনজন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে মাদরাসায় গিয়ে দেখা গেছে, মাদরাসার প্রধান ফটকে তালা লাগানো রয়েছে। কোনো শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত শুক্রবার মাদরাসায় দানের ৫০ হাজার টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করতে চান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেম্বার মীর হোসেন। এতে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। তাই তিনি ও তাঁর মহল্লার (শিবরামপুর) মসজিদের ইমাম এই মাদরাসার মুহতামিম মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম নিজেদের গ্রাম থেকে আসা মাদরাসার ছাত্রদের চলে যেতে বলেন। যাওয়ার সময় তাঁরা শ্রেণিকক্ষগুলোতে তালা দিয়ে যান। এমনকি মীর হোসেন মেম্বারকে না জানিয়ে কেউ তালা খুললে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে।’
জানতে চাইলে মাদরাসার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর হোসেন বলেন, ‘মাদরাসা কমিটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও তাঁর ভাইয়েরা এই মাদরাসার কোনো হিসাব-নিকাশ কমিটিকে বুঝিয়ে দিতে চান না। তাঁরা কথায় কথায় এই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে দাবি করেন। তাই তাঁরা ইচ্ছেমতো মাদরাসা চালাচ্ছেন। স্থানীয় লোকজনের সামনে আমাদের মহল্লার ইমাম এই মাদরাসার মুহতামিমসহ গ্রামের ছাত্রদের মাদরাসা থেকে নিয়ে যায়।’
মীর হোসেন আরও বলেন, ‘মাদরাসায় গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র থাকায় স্থানীয়দের সামনে মাদরাসার মুহতামিম মাদরাসায় তালা দিয়ে রাখেন। স্থানীয় কয়েকজনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য আগামী রোববার সংশ্লিষ্টরা আসবেন। বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হোক এটাই চাই।’
মাদরাসার মুহতামিম মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মাদরাসায় বিভিন্ন কিতাব ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র থাকায় তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। মাদরাসাটি খোলার জন্য আমার কাছে কেউ চাবি চাননি। তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তালা লাগানো হয়নি। মাদরাসার নিরাপত্তার জন্য তালা লাগানো হয়েছে।’
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাস্থলে থানা থেকে তিনজন অফিসারসহ ফোর্স পাঠানো হয়। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’