সীমান্ত থেকে বিএনপির অস্ত্র আনার খবর পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কম্বোডিয়ায় নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই আন্তর্জাতিক সংবাদ দেখে অনেকে আনন্দিত। সেখানে বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি বলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। সেখানে সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘খবর পাচ্ছি, সীমান্ত থেকে অস্ত্র কিনছে তারা (বিএনপি)। চাঁপাইনবাবগঞ্জ তাদের অস্ত্র সরবরাহের একটি ঘাঁটি। আগ্নেয়াস্ত্র এনে তারা মজুত করছে। তারা জানে, গণশক্তি জনশক্তি নয়। তারা মনে করে, অস্ত্রশক্তি হলো আসল শক্তি। যারা অস্ত্র দিয়ে ক্ষমতায় আসে, তাদের প্রতি জনগণের আস্থা থাকার কথা নয়।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এ দেশে যারা ক্ষমতাশীল ছিল, এই মাটি থেকে, জনগণের কাছ থেকে, জনগণের সমর্থন নিয়ে একজনও কি ক্ষমতায় এসেছে? জিয়াউর রহমান বলেন আর এরশাদ বলেন, খালেদা জিয়া তাদেরই উত্তরাধিকার। তাদেরই লিগ্যাসি। তাদের জনগণের ওপর আস্থা নেই। তারা জানে, নির্বাচনের রেজাল্ট কী হবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিদেশিদের কী করে বোঝাব, বিএনপি এমন একটা দল, যাদের গ্যারান্টি দিতে হবে, নির্বাচন হলে তারা জিততে পারবে? তাদের জয় সুনিশ্চিত। এই গ্যারান্টি না দিলে তারা কখনো চলমান নির্বাচনব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল হবে না। কাজেই আমাদেরও চোখ–কান খোলা রাখতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা চাই, সংঘাতমুক্ত, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু একটা নির্বাচন। জাতির কাছে এটা আমাদের প্রতিশ্রুতি। সেই লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন তো স্বাধীন করেছি। শেখ হাসিনার কারণে নির্বাচনব্যবস্থা আজকে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অধীনে সাব–অফিস নয়, নির্বাচন অফিস এখন একটা স্বাধীন অফিস। স্বাধীন নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয়েছে। এই একটি বিষয়ে ২০০৯ পূর্ববর্তী এবং ২০০৯ পরবর্তী অবস্থাকে মিলিয়ে দেখতে হবে। নির্বাচনব্যবস্থায় কারচুপি, জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ দেখে অনেকে আনন্দিত, কম্বোডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কম্বোডিয়ায় বিরোধী দল অংশ নেয়নি, সে জন্য নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। এখানে বিরোধী দল অংশ না নিলে কার অপরাধ? আমরা তাদের সাহায্যও বন্ধ করে দিয়েছি। এত দিন যার মুখ-চোখ শুকিয়ে গিয়েছিল, এখন আবার গলায় পানি এসেছে। ফখরুলের গলায় এখন অনেক পানি। দেখতে মনে হয় অনেক ভালো মানুষ, অথচ মুখে এত বিষ।’
এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বিএনপির সাত জেলা সমাবেশ আর আমাদের সাত উপজেলা সমাবেশ—সাত উপজেলা আর সাত জেলার সমাবেশের পার্থক্যটা দেখবেন। সবাই দেখেছে। এটা হলো শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রতি আস্থার একটা নিদর্শন।’
আর হেলাফেলায় সময় কাটানোর সুযোগ নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন থেকে আর নিষ্ক্রিয় থাকার সুযোগ নেই। নির্বাচন পর্যন্ত সব সময় সর্তক থাকতে হবে। আমরা সংঘাত করব না। আমরা মাঠে সতর্ক থাকব। সংঘাত যারা করতে আসে, তাদের প্রতিহত করব।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ ফারুক খান, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।