কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের প্রশাসনিক মূল ভবনে ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় পলেস্তারা খুলে পড়ে রড বের হয়ে আছে। পলেস্তারা ও ভবনের ধস ঠেকাতে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঠেস দিয়েছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর। দুই মাস আগে ঠেস দিলেও সংস্কারের অভাবে ঝুঁকি নিয়ে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। সরেজমিন দেখা যায়, মূল ভবনের দ্বিতীয় তলায় একাদশ শ্রেণির ক্লাস চলছে। শিক্ষার্থীরা মাথার ওপর পড়া ছাদ ও ধস ঠেকাতে দেয়া বাঁশের খুঁটির দিকে তাকিয়ে আছে। আতঙ্কে একটি শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে সেটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন অধ্যক্ষ নিজেই। পাশের কক্ষে তুলনামূলক পলেস্তারার ধস কম হওয়ায় সেখানে পাঠদান চলছে।
কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ভবনটি এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ বাঁশের খুঁটি দেয়ার কথা স্বীকার করে জানায়, সংস্কারের জন্য কোনো বাজেট না থাকায় সাময়িক ধস ঠেকাতে এ খুঁটি দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই মেরামত শুরু করা হবে। কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কলেজে বর্তমানে ১৪টি বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স, ছয় বিষয়ে মাস্টার্স পূর্বপাঠ, ডিগ্রি পাস ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি মিলে প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। প্রায় ৬২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই প্রশাসনিক মূল ভবনে ৩২টি শ্রেণিকক্ষ, একটি অডিটোরিয়াম, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ কার্যালয়সহ কয়েকটি বিভাগের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্পন্ন হতো। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মিরাজ হাসান বলেন, ক্লাসে মন বসে না। কয়েক দিন আগে আমার এক বন্ধুর গায়ে বাঁশের খুটি খুলে পড়েছিল। ভবনটি সংস্কার না করলে যে কোনো দিন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আরেক শিক্ষার্থী প্রিয়াংকা দাস বলেন, ক্লাসরুমের সামনে বাঁশের খুঁটি, ভিতরে প্লাস্টার ধসে গেছে। ক্লাসে বসলে মাথায় প্লাস্টার, সিমেন্ট খুলে পড়ে। ভয় ভয় নিয়ে প্রতিদিন ক্লাসে আসি। অধ্যক্ষ মীর্জা নাসির উদ্দীন বলেন, প্রশাসনিক ভবনটি কলেজের সবচেয়ে পুরাতন ভবন। কিছু কিছু জায়গায় প্লাস্টার খসে পড়েছে। একাদশ শ্রেণির দুটি শ্রেণিকক্ষের ছাদের বিমে ফাটল দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীর তুলনায় পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ ও ভবন না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই সেখানে ক্লাস চালাতে হচ্ছে। কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, ভবনটির নাজুক অবস্থার কথা শুনে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। ভবনটি সংস্কারের জন্য আমাদের কোনো বরাদ্দ নেই। অতিরিক্ত ধস ও ফাটল ঠেকাতে বাঁশের খুঁটি দিয়ে রেখেছি।