পিরোজপুরের কাউখালী সদরের আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কাজী হারুন অর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটু বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এই জলাবদ্ধতা নিরসনে বাস্তবভিত্তিক নেওয়া হচ্ছে না কোনো পদক্ষেপ। দুটি বিদ্যালয়ের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারী জলাবদ্ধতার কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন। বন্যার পানি না থাকলেও বিদ্যালয়ের খোলা মাঠে থৈ থৈ করে পানি। দিনের পর দিন বন্ধ রয়েছে খেলাধুলা, করতে পারছে না শরীচর্চা। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কখনো বৃষ্টির পানিতে পা পিছলে পড়ে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের বই-খাতা। ভিজে যাচ্ছে তাদের পোশাকও।
জানা যায়, বিদ্যালয়ের পেছনের খোলা মাঠে ও ডোবায় পানি জমে তা ওপরে উঠে আসায় একটু বর্ষা হলেই কোনটা মাঠ আর কোনটা ডোবা তা বোঝা মুশকিল। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হারও কমে যায়। এ পরিস্থিতিতে দ্রুততার সঙ্গে বিদ্যালয় মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের জোর দাবি জানান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক মহল। একটু বৃষ্টি হলেই বেশির ভাগ শিক্ষার্থীকে পানি ডিঙ্গিয়ে স্কুলে আসার পথে কাপড় ভেজা নিয়ে ক্লাস করতে হয়। দিনের পর দিন এভাবে ভিজে তারা স্কুলে যাতায়াত করে। অনেক শিক্ষার্থী এই স্কুলে আসতে ভয় পায়। ফলে শিক্ষা কার্যক্রমে প্রভাব পড়েছে।
বিদ্যালয়ের জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ডেঙ্গু মশা, বিভিন্ন পোকামাকড় ও সাপের নিরাপদ আশ্রয় স্থান হয়েছে এই ডোবা ও মাঠ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ক্লাস করতে ভয় পাচ্ছে, কখন না তাদেরকে সাপে আক্রমণ করে। অভিভাবকরা তাদের কোমলমতি ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।
কাউখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইনুল হোসেন মনির মোল্লা বলেন, পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা সাপের ভয়ে আতঙ্কে থাকে।
কাজী হারুন অর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিথীকা সাহা বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না।
কাউখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র জালিম মাহমুদ বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমাদের বিদ্যালয়ে যেতে ভয় লাগে। কারণ আমাদের ক্লাসের পেছনের ডোবার পানি নিষ্কাশন না হওয়ার বিভিন্ন প্রকার সাপ ও ডেঙ্গু মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। কাজী হারুন অর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী রিদি আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের আশপাশে পানি থাকার কারণে বিদ্যালয় যেতে ভয় লাগে। কারণ কখন না আমাদের সাপে আক্রমণ করে।
ওই এলাকার মুরুব্বি আব্দুল বারেক বলেন, পানি নিষ্কাশনের ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়েও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি। ফলে বাধ্য হয়ে এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় বাড়ি করার চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে কাউখালী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এলাকাবাসী সহযোগিতা করলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা বলেন, বিদ্যালয় দুটি পরিদর্শন করেছি এবং বিদ্যালয়ের পেছনের মাঠের পানির অবস্থা দেখেছি। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।