দুদিনের ছুটিশেষে নির্বাহী আদেশে আরো একদিন ছুটি বেড়েছে দেশে । এর আগে কারফিউ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে সপ্তাহখানেক ধরে স্থবির রয়েছে জনজীবন। রাজধানীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতানসহ বন্ধ রয়েছে সবধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্তরা । কাজের অভাবে ঢাকা ছাড়ছেন খেটে খাওয়া মানুষ ।
নিয়মিত যানবাহন চলাচল না করায় বিকল্প যানে রাজধানী ছাড়ছেন মানুষ । কেউ প্রাইভেট কারে, কেউ অ্যাম্বুলেন্সে, কাউকে ঢাকার লোকাল বাসে চেপে দূর গন্তব্যে রওনা করতে দেখা গেছে ।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধোলাইপার, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া ও চিটাগাং রোড এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। সরেজমিনে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় দেখা যায়, ঢাকার লোকাল বাস তুরাগ শরীয়তপুরের যাত্রী তুলছে। শরীয়তপুরের বাস পদ্মা বন্ধ । তবে পদ্মা কাউন্টারসংশ্লিষ্টদের তুরাগ বাসে করে অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী তুলতে দেখা যায় ।
নাম না প্রকাশের শর্তে কাউন্টারের একজন বলেন, আমাদের শরীয়তপুর লাইনের বাস পদ্মা বন্ধ, কাউন্টার বন্ধ । সকাল থেকে ঢাকার লোকাল বাস ভরে যাত্রীরা যাচ্ছে । আমরাও যাত্রী নিচ্ছি। নীলক্ষেতে একটি বইয়ের দোকানের কর্মচারী আবির হোসেন শরীয়তপুরের বাস চেপে বসেছেন। তিনি বলেন, দোকান বন্ধ, কবে খুলবে কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই বাড়ির পথে রওনা হয়েছি । আমাদের সাধারন ভাড়া ২৫০ টাকা ।এখন ৫০০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত আনোয়ার হোসেনও একই বাসে শরীয়তপুর যাচ্ছেন। তিনি বলেন, পরিবার থাকে গ্রামে। আমি ঢাকায় থাকি । অফিস-আদালত খোলার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছি । সকাল থেকে অনেক বাসই গেছে, কোনো সমস্যা হয়নি।
শরীয়তপুর বাসের সামনে আরেকটি বাস ভর্তি হচ্ছে বরিশালের যাত্রী নিয়ে । বাসটির চালক বলেন, এক সপ্তাহের মতো কাজ বন্ধ । আমাদের তো চলতে হয়। খবর নিয়ে জেনেছি রাস্তাঘাট স্বাভাবিক। কোন অসুবিধা নেই। তাই বাস নিয়ে বেরিয়ে পড়েছি।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫০০ টাকার ভাড়া ৮০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। ভাড়া বেশি হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ জানালেও বাস পাওয়ায় খুশি যাত্রীরা । রফিকুল ইসলাম নামে একজন যাত্রী বলেন, আমাদের কাজকর্ম বন্ধ। তাই বাড়ি যাওয়ার জন্য দুদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম । ভাড়া অস্বাভাবিক । কিছু করার নেই ।
যাত্রাবাড়ী থেকে অনেককে প্রাইভেট কার ও অ্যাম্বুলেন্স যোগে বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা গেছে । কেউ কেউ ভেঙে ভেঙে রাজধানী ছেড়েছেন । যাত্রাবাড়ী থেকে শনির আখড়া, শনির আখড়া থেকে সাইনবোর্ড যাওয়ার পর অল্পকিছু গাড়ি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন যাত্রীরা ।