দৈনিক শিক্ষাডটকম, পিরোজপুর : পিরোজপুরের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পেরিয়ে গেলেও এসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি আজও। ফলে ২১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) কাঠ ও কলাগাছের তৈরি শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার সাত উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাঠ, কলাগাছ, বাঁশ ও ইট ও সাদা কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস পালন করেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার সাত উপজেলায় ৯৯২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার।
কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহীদ মিনার না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার জন্য শিক্ষার্থীরা ইট বা কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে তারা শহীদের প্রতি শ্রদ্বা নিবেদন করেন। অনেক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা কাঠের তৈরি ছোট্ট একটি শহীদ মিনার তৈরি করে তা শ্রেণি কক্ষের টেবিলের উপরে রেখে তাতে ফুল দিয়ে শ্রদ্বা নিবেদন করছেন।
এদিকে জেলার ৪৮৩ টি মাধ্যমিক স্কুল, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদরাসার মধ্যে ২০০টি প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কাঠ-কলাগাছের তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্বাঞ্জলী দিয়ে থাকেন।
কাউখালী উপজেলার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ৫৭ বছর ধরে এই এলাকার শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে আমাদের প্রতিষ্ঠান। অথচ বিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল ও জায়গা না থাকায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার তৈরি করা যাচ্ছে না। প্রতি বছর আমরা কাউখালী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানাই।
জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বলা হয়েছে নিজেদের উদ্যোগে ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য। যাদের নির্মাণের সামর্থ্য নেই, তারা যেন আশপাশে যেখানে শহীদ মিনার আছে সেখানে শহীদদের সম্মান জানায়।
নতুন নির্মিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে বলা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের সরকারি কোনো তহবিল নেই। তবে ভাষা শহীদদের যথার্থ মর্যাদা দিতে হলে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরি।