কাঠামো পাচ্ছে সান্ধ্য কোর্স, কমিটি গঠন - দৈনিকশিক্ষা

কাঠামো পাচ্ছে সান্ধ্য কোর্স, কমিটি গঠন

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে খেয়ালখুশি মতো সান্ধ্য কোর্স পরিচালনা করছে। এ নিয়ে বিগত সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সমালোচনাও করেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাবেক আচার্য (সাবেক রাষ্ট্রপতি) মোঃ আবদুল হামিদ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও (ইউজিসি) সান্ধ্য কোর্স বন্ধে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। তাই এবার সান্ধ্য কোর্সকে একটি ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে ইউজিসি। এ লক্ষ্যে কোর্স পরিচালনায় গাইডলাইন প্রস্তুতের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্য ও উইকেন্ড কোর্স পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ইউজিসি। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপপরিচালক মৌলি আজাদকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সাবেক সদস্য ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) অ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. খবির উদ্দিন। এর বাইরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আরও দুজন শিক্ষককে কমিটিতে কো-অপ্ট সদস্য হিসেবে সংযুক্ত করা হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে তাদের প্রথম বৈঠক করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাবির ৩৫টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে, জাবির ১৬টি, জবির ১৯টি বিভাগ ও একটি ইনস্টিটিউটে, রাবির ১৬টি বিভাগ ও ৩টি ইনস্টিটিউটে এবং চবির ৬টি বিভাগে সান্ধ্য কোর্স চালু রয়েছে। বেশিরভাগ সান্ধ্য কোর্সে এক বা দুই বছরে ডিগ্রি দেয়। এগুলোতে সাধারণ কোর্সের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা গুনতে হয় শিক্ষার্থীদের।

ঢাবির সমাবর্তনে যতবার এসেছেন ততবারই সান্ধ্য কোর্স নিয়ে সমালোচনা করে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। তার মতে, ডিপ্লোমা ও সান্ধ্য কোর্সের নামে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রি দিচ্ছে। সান্ধ্য কোর্সের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সন্ধ্যার পরে মেলায় পরিণত হয়। দেশের অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এখন দিনে ‘সরকারি’ আর রাতে ‘বেসরকারি’ চরিত্র ধারণ করেছে। কিছু শিক্ষক নিয়মিত কোর্সের ব্যাপারে উদাসীন থাকলেও সান্ধ্য কোর্স, ডিপ্লোমা কোর্স এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। কেননা এগুলোতে নগদ প্রাপ্তি থাকে।

২০১৯ সালে ইউজিসি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সান্ধ্য কোর্স বন্ধে একটি নির্দেশনা দেয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এসব নির্দেশনা সংবলিত চিঠি পাঠানো হয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ইউজিসি। চিঠিতে বলা হয়েছিল, সান্ধ্য কোর্স পরিচালনার কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাই সান্ধ্য কোর্স বন্ধ হওয়া দরকার।

২০২২ সালে ইউজিসির দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সান্ধ্য, উইকেন্ড ও এক্সিকিউটিভ কোর্স পরিচালিত হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ ধরনের কোর্স পরিচালনা করা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি এবং নিয়মিত শিক্ষার্থীর স্বার্থের পরিপন্থি। এসব কোর্স বন্ধ হওয়া জরুরি। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী ইউসিসির পূর্বানুমোদনক্রমে দক্ষ জনবল তৈরিতে ডিপ্লোমা, শর্ট কোর্স, ভোকেশনাল ও ট্রেনিং গ্রোগ্রাম পরিচালনা করা যেতে পারে।

এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন  বলেন, সান্ধ্য কোর্সকে আমরা একটি কাঠামোর (ফ্রেমওয়ার্ক) মধ্যে নিয়ে আসব। এ ধরনের কোর্স যদি বিশ্বের অন্য দেশে থাকে, তাহলে আমাদের দেশেও সেটা থাকতে পারে। তবে সেটি অবশ্যই নীতিমালার মধ্যে থাকতে হবে। সময় নিয়ে সবদিক বিবেচনা করে নীতিমালা করতে হবে। আমরা যদি দেখি, এসব কোর্স রাষ্ট্রের দক্ষ মানবসম্পদ বাড়াতে অবদান রাখছে, তাহলে সেটা উৎসাহিত করতে চাই। নীতিমালা তৈরি হলে আমরা তা পূর্ণ কমিশনে পাস করাব। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের মতামত থাকবে।

এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ - dainik shiksha এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে - dainik shiksha শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী - dainik shiksha মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের - dainik shiksha অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036890506744385