দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক : কানাডার স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম তদারককারী চারটি গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড বিশ্বের কয়েকটি বড় বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের অভিযোগ, এ মাধ্যমগুলো শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এগুলো শিশুদের জন্য আসক্তির।
কানাডার বিভিন্ন অঞ্চলের চারটি স্কুল বোর্ড ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ২৯০ কোটি ডলার (৪০০ কোটি কানাডীয় ডলার) দাবি করেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ তিন হাজার কোটি টাকারও ওপরে। তাদের অভিযোগ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো শিশুদের চিন্তাভাবনা, আচরণ ও শেখার ধরনকে পাল্টে দিচ্ছে। এগুলোর ব্যাপক ব্যবহারের কারণে শিশুদের মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে, তাদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়ছে।
চারটি বোর্ড আলাদা আলাদা করেই অভিযোগগুলো দায়ের করেছে। তবে তারা সবাই ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা প্ল্যাটফর্ম ইনক, স্ন্যাপচ্যাটের মূল প্রতিষ্ঠান স্ন্যাপ ইনক এবং টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন।
যে চারটি বোর্ড অভিযোগ দায়ের করেছে, তার একটি টরন্টো ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড। এটি কানাডার সবচেয়ে বড় স্কুল বোর্ড। এর শিক্ষাবিষয়ক পরিচালক কলিন রাসেল রাউলিন্স বলেন, ‘আজকাল কম বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব পড়ছে, তা অস্বীকার করা যাবে না।’
অপর তিনটি স্কুল বোর্ড হলো—পিল ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড, টরন্টো ক্যাথলিক ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড ও অটোয়া-কার্লটন ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড।
কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো আসক্তি তৈরি করতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে এগুলো ব্যবহার করা হলে, তা মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা তৈরি করতে পারে।
২০২৩ এর মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেল বিবেক মুরথি বলেছিলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারের কারণে কম বয়সীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে বলে ক্রমাগত প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।’
মুরথি আরও বলেন, শিশুরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংস ও যৌন কনটেন্টের সংস্পর্শে আসছে। পাশাপাশি তারা বুলিং ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। শিশুরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করলে তাদের ঘুম কমে যেতে পারে, বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
গত বছর এ সার্জন জেনারেলের বক্তব্য থেকে জানা যায়, জরিপে অংশ নেওয়া ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের ৯৫ শতাংশই বলেছেন, তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন। তাদের মধ্য এক-তৃতীয়াংশ বলেছেন, তারা ‘প্রায় একটানা’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কানাডায় দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে অন্টারিওর প্রাদেশিক সরকারের প্রধান ডাগ ফোর্ডের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেছেন, স্কুল বোর্ডগুলোর এ তৎপরতার সঙ্গে তিনি একমত নন।