চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর ও ৫১ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে মানবন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা। গত রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো তারা এ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। শিক্ষকরা বলছেন, দাবি পূরণ না হলে বিকেলে অধিদপ্তর ব্লকেড করা হবে।
গতকাল সোমবার থেকে আন্দোলনকারীরা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজিজ তাহের খানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। আজ ভোরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় তিনি অধিদপ্তর ছাড়েন।
এদিকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের বেতনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফাইল পাঠানো আছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊধ্বতন কর্মকর্তারা বিদেশে আছেন বলে বেতন ছাড়ে দেরি হচ্ছে। এ নিয়ে আমাদের হাতে কিছু নেই। চাকরি রাজস্বখাতে নেয়ার জন্যও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা আছে।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, গত প্রায় ৫১ মাস ধরে অন্তত ৭৩৮ জন শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে তাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দও দেয়া হয়। এরপরও ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই থেকে বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে।
এ সময় চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর ও বেতন-ভাতা দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষকরা। তাছাড়া, দাবি আদায় হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তারা।
শিক্ষকরা আরো বলেন, কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার বকেয়া বেতন-ভাতা ও চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের বিষয়ে জানানো হলেও আশানুরূপ কোনো সুফল না পাওয়ায় ২২ সেপ্টেম্বর ৪১টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পৃক্ততায় এক দিনের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলন করা হয় এবং দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সমন্বয়হীনতা এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার দীর্ঘসূত্রতা এবং দীর্ঘ ৫১ মাস বেতনবিহীন অবস্থায় ও চাকরি রাজস্বকরণে দেরি হওয়ায় শিক্ষকরা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন এবং চরমভাবে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন (বিপিটিএফ) ২০ অক্টোবর থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে অব্যাহত রাখবে।