সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা, অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি ও চাকরিতে আবেদনের ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা করার দাবিতে আগামীকাল রোববার স্ব স্ব অবস্থান থেকে প্রতীকী সার্টিফিকেট পোড়ানো কর্মসূচি পালন করবে চাকরিপ্রত্যাশীরা। আগামী ১০ জুন কেন্দ্রীয়ভাবে একই কর্মসূচি পালন করা হবে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে।
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে নিজের সব অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোর পর ইডেন কলেজের ছাত্রী মুক্তা সুলতানাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে চাকরি দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সরগরম ফেসবুক সহসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো।
‘আমরাও সার্টিফিকেট পুড়িয়ে সরকারি চাকরি পেতে চাই’ নামে ফেসবুকে ইভেন্ট তৈরি করেন একদল তরুণ। এটি একটি প্রতীকী ও ব্যাঙ্গাত্মক ইভেন্ট। আইসিটি বিভাগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এটি সাধারণ মানুষের প্রতীকী ক্ষোভ। এমনকি খোদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী আরিফা জেসমিন কণিকা এমন কাজের সমালোচনা করেছেন।
এদিকে, এই ঘটনায় মুক্তা সুলতানাকে যুগ্ম-আহ্বায়কের পদ থেকে বরখাস্ত করেছে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ রাসেল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মুক্তা সুলতানা চাকরিতে যোগদানের মধ্য দিয়ে ৩৫ প্রত্যাশীদের আন্দোলনকে বিতর্কের মুখে ফেলার চেষ্টা করেছেন। শিক্ষার্থী সমাজের স্বার্থ পরিপন্থি কাজ করায় এবং সংগঠনের সদস্যদের/সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিব্রত করায় তাকে সংগঠনের যুগ্ম-আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, মুক্তা সুলতানা ৩৫ হাজার টাকা বেতনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের একটি প্রকল্পের ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে চাকরি পাওয়ার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, বরিশাল বিএম কলেজসহ বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাকরিপ্রত্যাশীরা সাবেক শিক্ষার্থীরা নিজেদের অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়েছেন। আগামীকাল প্রতীকী সার্টিফিকেট পোড়ানো কর্মসূচিতেও আন্দোলনকারী চাকরিপ্রত্যাশীরা নিজেদের অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট পোড়াবেন এবং সেটা ফেসবুকে লাইভ করে ছড়িয়ে দেবেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ‘চাকুরীতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’ এর আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শুভ বলেন, ‘একটা নেগেটিভ মেসেজ সবার মধ্যে পৌঁছেছে যে, সার্টিফিকেট পোড়ালেই চাকরি পাওয়া যায়। এটা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। এ ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতীকী সার্টিফিকেট পোড়ানোর কর্মসূচি দিয়েছি। এর মাধ্যমে সবাইকে জানাতে চাই, আমরা চাকরি চাই না, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি চাই।’
তিনি বলেন, ‘রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে চাকরিপ্রত্যাশীরা নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতীকী সার্টিফিকেট পোড়াবে। আর ১০ জুন কেন্দ্রীয়ভাবে এই কর্মসূচি পালন করা হবে রাজধানীর শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে।’