দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাজশাহী: রাজশাহীর তানোরে কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে স্কুলশিক্ষিকাকে বিয়ে করে প্রতারণা ও ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (১২ মে) সন্ধ্যায় পৌরশহরের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার যুবকের নাম নাজির হোসেন (৩৭)। তিনি তানোর উপজেলার কলমা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে।
পুলিশ জানায়, তানোর উপজেলার মালশিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার সঙ্গে এক বছর আগে ফেসবুকে পরিচয় হয় তানোর উপজেলা কলমা ইউনিয়নের কলমা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে নাজির হোসেনের। সেই থেকে তাদের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কথা হয় তাদের। নাজির তার পরিচয় দেন তিনি খুলনা মংলাবন্দরের কাস্টম অফিসার। তিনি অবিবাহিত পুরুষ।
ওই স্কুল শিক্ষিকা একজন ডিভোর্স প্রাপ্ত শিক্ষিকা জানার পরও এক পর্যায়ে নাজির ওই স্কুল শিক্ষিকাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় দফায় দফায় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সর্বশেষ ওই শিক্ষিকার কাছ থেকে জমি, পুকুর এবং মোটরসাইকেল কেনার নামে গত ৩ মার্চ তানোর ভূমি অফিসের সামনে ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। বিভিন্ন কৌশলে প্রায় ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় নাজির।
প্রতারণার শিকার ওই স্কুল শিক্ষিকা বলেন, নাজিরের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়। সে অবিবাহিত পুরুষ এবং কাস্টমস অফিসার পরিচয় দেন নিজেকে। আমি প্রথমেই তাকে জানিয়ে দিয়েছি আমি ডিভোর্স প্রাপ্ত মেয়ে। সে বিভিন্ন কৌশলে আমার কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার মতিগতি দেখে আমি ২০ এপ্রিল গোল্লাপাড়া আব্দুর মতিনের কাজি অফিসে গিয়ে তাকে বিয়ে করি। এবং সেই দিনই আমি আমার বাবার বাড়িতে একা চলে আসি। গত ২৫ এপ্রিল সে আমাকে ডাক যোগে আমার স্কুলে ও বাবার বাড়ির ঠিকানায় ডিভোর্স লেটার পাঠায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সে পূর্বে আরও দুইটি বিয়ে করেছেন। সে এলাকায় ঠকবাজ বলেও পরিচিত। সব কিছু জানার পর আমি আমার ১৮ লাখ টাকা চাইলে নাজির আমাকে ভয় ভিতিসহ আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
তানোর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, নাজির হোসেন আগেও দুটি বিয়ে করেছেন। সে একজন ঠকবাজ প্রকৃতির লোক। ওই স্কুলশিক্ষিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জেরে বিভিন্ন সময় শিক্ষিকার কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।