কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা ও চিনি চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগের ওঠে। এবার একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ উমান খানের আপত্তিকর ছবি ও ফেসবুক-মেসেঞ্জারে কথোপকথনের একাধিক স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ফয়েজের দাবি, এসব সুপার এডিট করা। এ বিষয়ে তিনি থানায় জিডিও করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় জিডি করেন তিনি। পরে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জিডির কপি তিনি নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
জিডিতে ফয়েজ উমান খান উল্লেখ করেন, ‘আমার নামে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ছবি, বিভিন্ন কথোপকথন ছড়ানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। এটি বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে সুপার এডিট করা হয়েছে। এটি ছড়ানোর কারণে আমি বিভ্রান্তিকর অবস্থায় পড়েছি।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফাও জিডির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের করা সাধারণ ডায়েরির বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মোহাম্মদ ফয়েজ উমান খানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়েছে। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় আমাদের বিরোধীপক্ষ নানা ষড়যন্ত্রের পরও বর্তমান কমিটি ভাঙতে না পেরে এখন আমার সুপার এডিটেড ছবি ও কথোপকথনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করাসহ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ জন্য আমি থানায় জিডি করতে বাধ্য হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমি সাইবার অপরাধ আইনে মামলা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সম্প্রতি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনের ভাগ্নে নাজমুল হোসেন হীরার সঙ্গে এক তরুণীর একটি আপত্তিকর ভিডিয়ো ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর গত ২৩ জুন ভুক্তভোগী তরুণী নাজমুল হোসেন হীরাকে প্রধান আসামি করে পর্নোগ্রাফি আইনে আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনকে ২ নম্বর আসামি করা হয়। পরে আদালত কিশোরগঞ্জ মডেল থানা–পুলিশকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের বিষয়গুলো গণমাধ্যমে প্রচার-প্রকাশ হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে গত বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হুসাইন আহমেদ ও কাজল দাসকে দায়িত্ব দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে কেন্দ্রে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
এরই মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ উমান খানের আপত্তিকর ছবি ও কথোপকথন সদৃশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।