দৈনিকশিক্ষাডটকম, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জে অপহৃত মাদরাসাছাত্র নিদানুর ইসলাম লাবিবকে (১৩) ২৯ দিন পর সিলেট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা থানার ভার্থখোলা এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করে র্যাব।
এ সময় অপহরণে জড়িত মো. আবদুল্লাহ (২৬) ও মো. রাসেল (২৫) নামে দুই তরুণকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতার মো. আবদুল্লাহ বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের মনির আহমেদের ছেলে এবং মো. রাসেল কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার দেওড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।
অপহৃত লাবিব কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের রথখলা এলাকার মো. নজরুল ইসলাম লিটনের ছেলে এবং শহরের নগুয়া হেফজুল আরকাম হাফিজিয়া মাদরাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র।
আজ রোববার দুপুরের দিকে র্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অপহৃত মাদরাসাছাত্র উদ্ধার ও দুই অপহরণকারীর গ্রেফতারের বিষয়টি জানায় কোম্পানি অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির।
আশরাফুল কবির জানান, গত ২২ ডিসেম্বর বিকেলে মাদরাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয় লাবিব। ওই দিন রাত ৭টার দিকে মাদরাসার শিক্ষক লাবিবের মাকে কল করে জানায় লাবিব মাদরাসার আসেনি। পরে লাবিবকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে মা মোছা. লুৎফা বেগম কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় ২৫ ডিসেম্বর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘লাবিবের মা জিডির কপিসহ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পে অভিযোগ দিলে লাবিবকে উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। পরে ১৭ জানুয়ারি আমরা নিশ্চিত হই, একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র লাবিবকে অপহরণ করেছে। অপহরণকারীরা তাকে নিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরব, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেটে স্থান পরিবর্তন করায় উদ্ধার এবং অপহরণকারী চক্রকে গ্রেফতার করতে কিছুটা বেগ পেতে হয়।’
আশরাফুল কবির বলেন, অপহরণ চক্রের মূল হোতা মো. আব্দুল্লাহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে লাবিবের পরিবারকে কল করে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে লাবিবকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিতে থাকে। লাবিবের পরিবার নিরুপায় হয়ে গত ২০ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে তিন হাজার টাকা এবং সন্ধ্যা ৭টার দিকে ২৫ হাজার টাকা অপহরণকারী মো. আব্দুল্লাহর দেওয়া বিকাশ নম্বরে পাঠায়।
স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির আরও জানান, লাবিবের মা মোছা. লুৎফা বেগম তাঁর ছেলের অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবিসংক্রান্তে মামলা দায়ের করেন।
মো. আশরাফুল কবির জানান, এ ঘটনায় মুক্তিপণের টাকা যে বিকাশ নম্বরে পাঠানো হয়েছিল, সেই নম্বরের সূত্র ধরে তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নিশ্চিত হয় র্যাব। পরে অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা আবদুল্লাহ ও রাসেলকে গ্রেফতার করে। মুক্তিপণ আদায়ের ২৪ হাজার ৫০০ টাকা এবং দুটি মোবাইল ফোনসহ পাঁচটি সিম জব্দ করা হয়। তাঁদের কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।