কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে বহিষ্কার করার আদেশ স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার (৩০ আগস্ট) হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন।
আদালতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। শিক্ষার্থী ইকবালের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান।
এর আগে, ১৪ আগস্ট কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেয়া বহিষ্কারাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ আট জনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
নোটিশ পাঠানোর পর আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান জানিয়েছিলেন, অফিস আদেশের মাধ্যমে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোনো আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া তার সংবাদে উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের কোনো প্রমাণ মেলেনি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন।
‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬’-এর ৩২ নম্বর ধারা অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ড থাকার কথা থাকলেও সে সংক্রান্ত কোনো বোর্ড এবং বিধি তৈরি হয়নি। এই অবস্থায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত বলে জানান শিহাব উদ্দিন খান।
তিনি আরও জানান, কোনো সংবাদের বিষয়ে যদি উপাচার্য সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে তার প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার অধিকার রয়েছে। তা না করে ইকবালকে বহিষ্কার করে উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
ইকবাল সংবাদকর্মী হিসেবে শুধুমাত্র উপাচার্যের হুবহু বক্তব্য তুলে ধরেছেন যার অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে। সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯(২)(খ) অনুচ্ছেদে উল্লেখিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন করেছে।
এ ছাড়া ইকবালকে তার অবস্থান ব্যাখ্যার জন্য কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে বহিষ্কারাদেশ দেয়া প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের নীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গত ৩১ জুলাই উপাচার্যের বক্তব্য নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ২ আগস্ট সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।