আগামী অর্থবছর দেশে ডিজিটাল ব্যাংক চালুর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ক্রেডিট স্কোরিংয়ের মাধ্যমে এখান থেকে ঋণ দেওয়া হবে। ভুয়া ও বেনামি ঋণগ্রহীতা শনাক্ত করতে এটা সহায়ক হবে। একই সঙ্গে প্রকৃত ঋণগ্রহীতারা দ্রুত ঋণ নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম (বাজেট) অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমোদনক্রমে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নামসর্বস্ব কোম্পানি খুলে কিংবা ভুয়া বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে বিভিন্ন পক্ষের যোগসাজশে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বের করার ঘটনা বেড়েছে। কখনও ব্যাংকের পরিচালনায় থেকে কিংবা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তায় জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নেওয়া হয়। ঋণগ্রহীতার আসল পরিচয় আড়াল এবং পর্যাপ্ত জামানত না থাকায় ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন। বেনামে নেওয়া ঋণের বেশিরভাগই পাচার হয়। ফলে অনাদায়ী থাকে। বর্তমানে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বিবেচনা করা হচ্ছে বেনামি ভুয়া ঋণকে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রক্রিয়া দ্রুততর এবং পরিধি বাড়ানোর কৌশল নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি কমিটি কাজ করছে। তারা ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। আগামী অর্থবছরেই ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। এ ধরনের আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ক্রেডিট স্কোরিং করা হবে। ডিজিটাল ব্যাংক ও ক্রেডিট স্কোরিং চালু হলে খুব সহজে ভুয়া ও বেনামি ঋণগ্রহীতা শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এতে প্রকৃত ঋণগ্রহীতাদের ঋণ প্রক্রিয়া অনেক সহজ হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিমালার খসড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের আগামী সভায় উঠতে পারে। এ ধরনের একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ১৫০ থেকে ২০০ কোটি টাকার মূলধনের শর্ত দেওয়া হবে। ডিজিটাল ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ, বিভিন্ন ফি গ্রহণ– সবই হবে অ্যাপভিত্তিক। এর কোনো শাখা থাকবে না। প্রধান কার্যালয়ের জন্য শুধু একটি অফিস থাকবে। কেউ ঋণ আবেদন করলে যোগ্য কিনা যাচাই-বাছাই করা হবে কৃত্রিম ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে। এর ফলে এখনকার মতো জালিয়াতি সহজ বা প্রভাব খাটিয়ে ঋণ নেওয়া কঠিন হবে।