কেনো অধিক স্পেশাল, আরও বেশি স্মরণীয় - দৈনিকশিক্ষা

কেনো অধিক স্পেশাল, আরও বেশি স্মরণীয়

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক |

সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে গুলির বেগে বল ছুটে গেলো বাউন্ডারিতে। স্টাম্প মাইকে শোনা গেলো গর্জন। নিশ্চিতভাবেই তা মুশফিকুর রহিমের বজ্র হুঙ্কার! টিভি পর্দায় দেখা গেলো, ড্রেসিং রুমের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছেন নাজমুল হোসেন শান্তও। মাঠ থেকে ড্রেসিং রুম হয়ে পুরো মাঠে, রাওয়ালপিন্ডি হয়ে গোটা পাকিস্তানে ছড়িয়ে পড়ল যেনো সেই আওয়াজ। পাকিস্তানের বুকে বাংলাদেশের বিজয় উল্লাস!

জয়ের সুবাস মেখে যে দিনের শুরু, স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায় সেই আবেশে মাখামাখি হলো বাংলাদেশ দল। দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানকে ৬ উইকেট হারিয়ে ঐতিহাসিক এক সিরিজ জয়ে নিজেদের রাঙালো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

দেশের বাইরে বাংলাদেশের মাত্র দ্বিতীয় সিরিজ জয় এটি। তবে পূর্ণ শক্তির কোনো দলের বিপক্ষে এটিই প্রথম। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ২-০ ব্যবধানে জিতলেও সেবার চুক্তি সংক্রান্ত ঝামেলায় খেলেননি শীর্ষ ক্রিকেটারদের কেউ। বাংলাদেশ সিরিজ জিতেছিল দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে। এবারের জয় তাই অনেক বেশি স্পেশাল, আরও বেশি স্মরণীয়।

শেষ ইনিংসের ১৮৫ রান তাড়ায় শেষ দিনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৪৩ রান। সেই লক্ষ্যে খুব দ্রুততায় ছুটতে পারেনি দল। তবে প্রয়োজনও পড়েনি। ম্যাচ সবসময়ই ছিল নিয়ন্ত্রণেই। রান তাড়ায় কখনও মনে হয়নি বাংলাদেশ হারতে পারে।

ফিফটি করতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যান। কয়েকজনের অবদানে বেশ সহজেই জিতে গেছে বাংলাদেশ। গোটা সিরিজেরই প্রতীকী বলা যায় এই শেষ ইনিংস। সম্মিলিত দলীয় পারফরম্যান্সের জয়গান গেয়েই অসাধারণ এই সিরিজ জয়ের সাফল্য ধরা দিয়েছে।

এই দিনের বাস্তবতায় বাংলাদেশের জয়টাই ছিল সবচেয়ে সম্ভাব্য ফল। কিন্তু ম্যাচের তৃতীয় দিনে (কার্যত যা ছিল দ্বিতীয় দিন) ফিরে গেলে, ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছিল বাংলাদেশ, মান বাঁচানোই যখন মনে হচ্ছিল বড় দায়, সেখান থেকে এভাবে ম্যাচ জয় তো রূপকথার মতোই। বাংলাদেশের ইতিহাসে তো বটেই, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসেই আলাদা জায়গা নিয়ে থাকবে এই জয়।

প্রথম ইনিংসে এতো কম রানে ৬ উইকেট হারিয়েও জয় টেস্ট ক্রিকেটে দেখা গেলো ১৩৭ বছর পর! সেই ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ও পরে ৪৫ রানে অলআউট হয়েও শেষ পর্যন্ত ১৩ রানে ম্যাচ জিতেছিল ইংল্যান্ড। এবার বাংলাদেশও এই রেকর্ডে তাদের সঙ্গী।

দিনের শুরুতে পাকিস্তানি পেসারদের বোলিং ছিলো বেশ আঁটসাঁট। দ্বিতীয় বলে সাদমান ইসলাম একটি চার মারলেও পরে শট খেলার সুযোগ খুব একটা পাননি দুই ব্যাটসম্যান।

সকাল থেকে দারুণ বোলিং করতে থাকা মির হামজা পাকিস্তানকে এনে দেন প্রথম সাফল্য। তার দুর্দান্ত ডেলিভারি জাকির হাসানের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে ছোবল দেয় স্টাম্পে। আগের দিন ২৩ বলে ৩১ রান করা ওপেনার আউট হন ৩৯ বলে ৪০ রান করে।

একটু পর হামজার বলেই রক্ষা পান সাদমান। স্লিপে কঠিন ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি সালমান আলি আঘা। তবে পরের ওভারেই ফাঁদে পা দেন এই ওপেনার। বারবার তাকে ড্রাইভ করতে প্রলুব্ধ করছিলেন পাকিস্তানি বোলাররা। ড্রাইভ খেলেই মিড অফে সহজ ক্যাচ দেন তিনি ২৪ রান করে।

এরপর কিছটা অস্বস্তিময় সময় এসেছে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকের জন্য। ব্যাটের কানায় লেগেছে বল, স্লিপ দিয়ে গলে গেছে কয়েক দফায়। তবে সব সামলে রানও বাড়াতে থাকেন দুজন। লাঞ্চের আগে জুটি পেরিয়ে যায় পঞ্চাশ।

লাঞ্চের পরপর শান্তকে হারায় বাংলাদেশ। সালমানকে রিভার্স সুইপে চার মারার পরের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক (৮২ বলে ৩৮)। টানা ৯ ইনিংসে ফিফটির দেখা পেলেন না তিনি। এর চেয়েও বড় আক্ষেপ হতে পারে এ দিন, জয়ের মুহূর্তটায় থাকতে পারলেন না ক্রিজে।

সেই সুযোগটি হারান মুমিনুলও। দীর্ঘক্ষণ লড়াই করে এক প্রান্ত থেকে দলকে টানছিলেন তিনি। ব্যাট করছিলেন বেশ সতর্কতায়। কিন্তু হঠাৎ আবরার আহমেদকে তুলে মেরে উইকেট হারান তিনি ৩৪ রানে (৭১ বলে)।

মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান সেই ভুল করেননি। দলের অভিজ্ঞতম দুই ক্রিকেটার আস্তে আস্তে দলকে নিয়ে যান কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। জয় নাগালে থাকার পরও অনেক সময় নিয়েছেন দুজন। ৩২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি এসেছে ১২ ওভারে।
তাতে হয়তো অধৈর্য হয়ে উঠেছেন কেউ কেউ, অনেকেই হয়েছেন অস্থির। বৃষ্টির শঙ্কা মাথায় রাখলে, আরেকটু চালিয়ে হয়তো খেলতে পারতেন দুজন। তবে কখনও কখনও এভাবে ধীরে ধীরে জয়ের দিকে যাওয়াও কম তৃপ্তির নয়। 

গতকালের ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন লিটন দাস। আর ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। 

 

শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028030872344971