ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া খাদেমুল ইসলাম (কেআই) ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে টাকা দিলে দাখিল পরীক্ষার ব্যবহারিকের নম্বর দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযোগের সততা যাচাই করতে গেলে দাখিল পরীক্ষার্থীরা জানান প্রত্যেক বিষয়ের জন্য তাদের গুনতে হয়েছে ২০০ টাকা করে।
মাদরাসার গেইটে কথা হয় আলামিন, শ্রাবনী, জয়নব ও হেলালসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তারা বলেন, আমাদের ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ, এখন কথা বলতে সমস্যা নেই। প্রতি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রে ২০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। ২০০ টাকার কম দিলে নানামুখী ত্রুটি ধরে হয়রানি করা হয়। আমরা ঝামেলায় যেতে চাই না। আর এ টাকা নেয়া আমাদের আগেও চালু ছিলো, সেজন্য আমরাও দিয়ে যাচ্ছি। আমরা টাকা দিয়েছি আমাদের মাদরাসার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকের কাছে।
জানা গেছে, এ বছর ফুলবাড়ীয়া খাদেমুল ইসলাম (কেআই) ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে মোট ৭৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন। এদের মধ্যে ২৫০ জন বিজ্ঞান বিভাগের। তাদের ৪ টি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা রয়েছে। ২০০ টাকা হারে তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে অন্তত ২ লাখ টাকা। আর মানবিক বিভাগের ৪৯৪ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ টাকা হারে উত্তোলন করা হয়েছে ৯৮ হাজার টাকা। সর্বমোট ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।
বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকরা বলছেন, ছাত্র প্রতি আমাদের মোটা অংকের একটা টাকা কেন্দ্রে জমা দিতে হয়। তবে সেই টাকার অংক বলা যাবে না।
কেন্দ্রের ব্যবহারিক পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক ও জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আমরা সামান্য কিছু টাকা নেই তবে সেটা খুবই অল্প। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকরা বেশি উত্তোলন করতে পারে, কারণ তাদের অনেক খরচাপাতি আছে।
কেন্দ্রে নিয়োজিত কর্মচারীরা জানিয়েছেন ব্যবহারিক খাত থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা আদায় হয় কিন্তু আমরা শুধু নাস্তার টাকা পাই। ব্যবহারিকের টাকা স্যারেরাই দফারফা করে।
অভিভাবকরা জানান, টাকা দিলে পরীক্ষায় নম্বর পাওয়া যায়, এটা কী করে সম্ভব? এর ফলে যেটা হয়, সেটা হল অনেক পরীক্ষার্থী ফেল করেও ব্যবহারিকে ২৫ এর মধ্যে ২৫ পেয়ে থাকে। হাস্যকর একটা বিষয়। আশাকরি ভবিষৎ এর মূল উৎপাটন হবে।
কেন্দ্র সচিব ও অধ্যক্ষ ইউনুছ আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ব্যবহারিকের নামে আমি টাকা গ্রহণ করি না। ছাত্র-ছাত্রীদের বার বার বলেছি তারপরও তারা টাকা দিলে আমার কি করার আছে? কেন্দ্র থেকে শিক্ষকদের সম্মানি দেয়া হবে, সেখান থেকে টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ইউএনও স্যারের নির্দেশে বিষয়টি যাচাই করার চেষ্টা করেছি কিন্তু পাইনি।