কোটা সংস্কারের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ‘বাইরের ইন্ধন’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ সময় মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করা সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সরে যেতেও আহ্বান জানিয়েছে ফরহাদ হোসেন।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কার দরকার। কোটা কতটুকু থাকবে তা নিয়ে আদালতে যুক্তিতর্ক হতে পারে। কিন্তু রাস্তায় থেকে আন্দোলন করলে, তাতে জনদুর্ভোগ ছাড়া কিছু হয় না।
আর সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করলে একটা গোষ্ঠী দ্বারা প্ররোচিত হয় বলে মন্তব্য করে মন্ত্রী। বলেন, এই আন্দোলনে বাইরের ইন্ধন রয়েছে।
তাই কারো দ্বারা প্ররোচিত না হতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
কোটা সংস্কার ও মেধাভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র জারি করে সরকার। গত ৫ জুন সেই পরিপত্রের আংশিক অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এর ফলে সরকারি চাকরিতে আগের কোটা পদ্ধতি ফিরে আসে।
এরপরই হাইকোর্টের আদেশ বাতিল এবং ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসহ, দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করছেন তারা। এতে তীব্র ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
এরি মধ্যে বুধবার হাইকোর্টের আদেশে এক মাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছে আপিল বিভাগ। এই সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা থাকবে না। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদেরও ক্লাসে ফিরতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি।
কিন্তু এসবের কিছুই মানতে নারাজ শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে তারা আগের মতোই অবরোধ-কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা এখন নতুন দাবি তুলেছেন যে, আদালত নয়, সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসতে হবে।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বিচার বিভাগের বিষয় বিচার বিভাগেই নিষ্পত্তি করতে হয়। শিক্ষক হিসেবেও বলবো, রাস্তায় না থেকে আদালতে নিষ্পত্তি করা দরকার।
আর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র জারি করে কোটা তুলে দেওয়ায় সরকারি চাকরিতে নারীদের অংশগ্রহণ কমে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ৪০ বিসিএসে ৫৯ জেলা থেকে কোনো নারী পুলিশ চাকরি সুযোগ পায়নি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সম্প্রতি প্রশ্নফাঁস চক্রের ১৭ সদস্যের গ্রেপ্তার নিয়েও জবাব দেন ফরহাদ হোসেন। বলেন, পিএসসি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
তবে যদি কেউ যদি প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে থাকেন এবং এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান জনপ্রশাসনমন্ত্রী।