আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে সরকারের খাতভিত্তিক অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা এবং এই খাতে ভাতার পরিমাণ ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাবকে বাজেটের ইতিবাচক দিক বলে মনে করছে দেশের একমাত্র ডিজিটাল ব্যাংক নগদ। একইসঙ্গে ক্যাশলেস লেনদেন জনপ্রিয় করতে বাজেটে সরকারের আরো জোরালো অবস্থান পরিষ্কার করার পরামর্শও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ঘোষিত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিলো ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট অনুসারে, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় বর্তমান তালিকার সঙ্গে আগামী অর্থবছরে আরো ৯ লাখ ৮১ হাজার ৬১ জনকে অন্তর্ভূক্ত করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। বর্তমানে বিভিন্নখাতে সরকার ১ লাখ ২৯ হাজার জন পিছিয়ে পড়া মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা দেয়। এই তালিকায় ২৯ লাখ প্রতিবন্ধীকে ভাতা দেয় সরকার। প্রস্তাবিত বাজেটে আরো ৩ লাখ ৩৪ হাজার জন প্রতিবন্ধীকে তালিকায় যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
তাছাড়া মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৪ হাজার ৮০০ জনের সঙ্গে আরো ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৮০ জন বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। বয়স্ক ভাতাভোগী ৫৮ লাখ ১ হাজার জনের সঙ্গে আরো ২ লাখ জনকে অন্তর্ভূক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত ২৫ লাখ ৭৫ হাজারের সঙ্গে আরো ২ লাখ বাড়ানো এবং বেদে, হিজড়া ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবে ভাতাভোগীর সংখ্যা আরো প্রায় ৯৭ হাজার জন বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
ভাতার পরিমাণ ও সুবিধাভোগী বৃদ্ধির এই উদ্যোগ বাংলাদেশকে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠার পথে অনেক দূর এগিয়ে দেবে বলে মনে করে নগদ। সেই সঙ্গে ভাতা বিতরণ যেহেতু ডিজিটাল মাধ্যমে হচ্ছে, তাই এই প্রক্রিয়া ক্যাশলেস লেনদেনকে অনেকটা এগিয়ে দেবে।
ঘোষিত বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশ ও ক্যাশলেস সমাজ বিনির্মাণের জন্য বেশকিছু ইতিবাচক দিক আছে। সে কারণে মোটা দাগে বাজেট ইতিবাচক হয়েছে। তবে উন্নত রাষ্ট্র হওয়ার জন্য আরো কিছু বিষয় বাজেটে সন্নিবেশিত হওয়া জরুরি বলে মনে করে নগদ।
ক্যাশলেস লেনদেনকে জনপ্রিয় করতে সরকারের দিক থেকে উদ্যোক্তাদের কিছুটা হলেও উৎসাহ দেয়া প্রয়োজন, যা প্রস্তাবিত বাজেটে অনুপস্থিত। তবে বাজেট পাসের আগেই অর্থমন্ত্রীর এই দিকটি নিয়ে আরো কাজ করার সুযোগ থাকবে বলেও মনে করছেন তারা।
নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক বলেন, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে দেশের মোট লেদেনের ৩০ শতাংশ ক্যাশলেস করা বা ২০২৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ৭৫ শতাংশ ক্যাশলেস অথবা ২০৩১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে দেশকে পরিপূর্ণ ক্যাশলেস করে গেড়ে তোলার যে লক্ষ্য সেটি অর্জনের জন্য ডিজিটাল ব্যাংক হবে প্রধান বাহন। আর এ কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে ডিজিটাল ব্যাংক কিছুটা হলেও ট্যাক্স সুবিধা পেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
বাজেট প্রস্তাবে ডিজিটাল ব্যাংকের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যাংকে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্রেডিট স্কোরিং সিস্টেম চালু করা হবে। এতে বেনামী ঋণগ্রহীতা শনাক্ত করা যাবে।’