‘শহিদ উদ্দিন আহমেদ আহনাফ’, দুরন্ত তরুণ। সবেমাত্র একাদশ শ্রেণিতে পড়ছিল। হয়তো তার চোখে স্বপ্ন ছিল নতুন বাংলাদেশ গড়ার। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই নেমেছিল রাজপথে। আর সেখানেই প্রাণঘাতী বুলেট কেড়ে নেয় আহনাফের জীবন। আর ফেরা হয়নি সেই পরিচিত ক্লাসরুমে। যেখানে সহপাঠীদের সাথে কোলাহলে মেতে উঠতো আহনাফ নিজেও।
তবে আহনাফ ক্লাসে না ফিরলেও ফিরেছে আহনাফের স্মৃতি। বন্ধু কিংবা সহপাঠী কেউই ভুলতে পারছেন না আহনাফের কথা। তাই তো ক্লাস যেদিন খুললো, সেদিন কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি টেবিলে একপাশে বসার স্থান ছিল খালি। তবে বই রাখার স্থানে রাখা হয়েছে ফুলের তোড়া। যেখানে লেখা রয়েছে, ‘শহিদ উদ্দিন আহমেদ আহনাফ’।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে গুলিতে নিহত হন আহনাফ। আন্দোলন শেষে রাজধানীর বিএফ শাহীন কলেজে আহনাফের সকল সহপাঠী ক্লাসে-পরীক্ষার টেবিলে ফিরলেও ফেরেনি আন্দোলনে নিহত বুলেটবিদ্ধ আহনাফ।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ (১৮ আগস্ট) থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফুলের তোড়া রাখা দুটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায় আহনাফের টেবিলটা ছিল ফাঁকা। তাঁর স্মরণে বন্ধুরা সেখানে ফুল রেখেছে। আহনাফের শোকাহত বন্ধুরা তাদের প্রিয় সহপাঠীকে ভুলে যায়নি। কখনো ভুলতে পারবে না।
রাজধানীর বিএএফ শাহীন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল আহনাফ। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে শুরু থেকেই আহনাফ সোচ্চার ছিল। আন্দোলনে অংশ নিয়ে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেটে আহত হয়ে সে একবার বাসায় ফিরেছিল। আন্দোলনে যেতে নিষেধ করলে আহনাফ তার মা আর খালার নিষেধ শোনেনি। পরবর্তীতে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে গুলিতে নিহত হয় আহনাফ।