কড়াকড়িতেও যাচ্ছে না শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন আসক্তি - দৈনিকশিক্ষা

কড়াকড়িতেও যাচ্ছে না শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন আসক্তি

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি |

যশোরের মণিরামপুরে স্কুলগামী সিংহভাগ শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনে (স্মার্টফোন) আসক্ত হয়ে পড়েছেন। বিদ্যালয়ে নোটিশ করে এবং শিক্ষকদের কঠোর নজরদারিতেও আসক্তি কাটানো যাচ্ছে না। করোনার সময় দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় পাঠদান চলমান রাখতে অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম চালু হয়। এ সময় অভিভাবকরাও সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে যেকোনো উপায়ে স্মার্টফোন কিনে দেন। 

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক কার্যক্রমকে শিক্ষার্থীরা নেতিবাচকভাবে নিয়ে স্মার্টফোনে পাবজি, ফ্রিফায়ারসহ নানা ধরনের গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। যা এখন গলার কাটা হয়ে দেখা দিয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ১৯৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে ১১১টি মাধ্যমিক, সাতটি নিম্ন মাধ্যমিক, দুইটি কারিগরি স্কুল, সাতটি মহাবিদ্যালয়, ছয়টি ডিগ্রি কলেজ, দুইটি কারিগরি কলেজ, ৫০টি দাখিল মাদরাসা, ছয়টি ফাজিল মাদরাসা এবং ১৩টি আলিম মাদরাসা রয়েছে। মাধ্যমিক স্তরে ২৭ হাজার ১২০ জন ও নিম্নমাধ্যমিক স্তরে ৮৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। অপর দিকে চারটি কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ৭২৬ জন শিক্ষার্থী এবং ৭০টি মাদরাসায় ১১ হাজার ৮৮৪ জন শিক্ষার্থী আছেন।

অধিকাংশ শিক্ষার্থীর হাতেই রয়েছে স্মার্টফোন। তাদের আসক্তি অভিভাবকসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। স্কুল ব্যাগের মধ্যে লুকিয়ে মোবাইলফোন নিয়ে এসে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে দল বেঁধে গেম খেলায় মেতে উঠছেন। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নিয়ে বিদ্যালয়ে না আসতে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করে। এমনকি শাস্তি দেয়ার বিধানও রাখে। কিন্তু কোনো কিছুই কাজে আসছে না। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে প্রবেশের আগে সঙ্গে আনা মোবাইল ফোনটি দোকানে রেখে আসেন। পরে টিফিন কিংবা সুযোগ পেলেই দোকানে গিয়ে মোবাইলে গেম খেলছেন।

রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ কামাল তুষার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিষয়টি খুবই আশঙ্কাজনক। প্রতিদিন শিক্ষকদের দিয়ে স্কুলব্যাগ চেক করিয়ে, কঠোরতা দেখিয়েও শিক্ষার্থীদের মোবাইলফোন আসক্তি থেকে নিবৃত করা যাচ্ছে না। 

গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে করোনার সময় অনলাইন ক্লাস করতে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের স্মার্টফোন কিনতে বলা হয়। কিন্তু এখনো শিক্ষার্থীরা মিথ্যা কথা বলে তাদের অভিভাকদের স্মার্টফোন কিনতে স্যারদের দোহাই দিচ্ছে। 

তিনি একটি দুঃখজনক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, কিছুদিন আগে পেশায় ভ্যানচালক একজন অভিভাবক তার কাছে এসে জানতে চান, স্যার একটি বড় মোবাইল (স্মার্ট ফোন) কিনতে কত লাগবে? তিনি তার কাছে জানতে চান ফোন দিয়ে কি হবে? প্রতি উত্তরে ওই অভিভাবক বলেন, আপনারা ছেলেকে ফোন কিনে বিদ্যালয়ে আসতে বলেছেন। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই অভিভাবকের কাছে জানতে চান, ফোন কেনার টাকা কোথায় পাবেন, অভিভাবক বলেন, তিনি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কিনে দেবেন। পরে ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে আনলে অভিভাবক বুঝতে পারেন ছেলে তাকে মিথ্যা বলেছে। এ চিত্র শুধু এই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নয়, উপজেলার সব প্রতিষ্ঠানেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এ থেকে উত্তরণের উপায় জানতে চাইলে নেহালপুর স্কুল অ্যাণ্ড কলেজের অধ্যক্ষ চঞ্চল ভট্টাচার্য্য দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোন নিয়ে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও মানছে না শিক্ষার্থীরা। তারপরও শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করে এবং অভিভাবকদের ডেকে এ ব্যাপারে মতবিনিময় করা হচ্ছে। এতে কিছুটা ফল পাওয়া যাচ্ছে।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030219554901123