দেশের পটপরিবর্তন হলেও বাজারে মেলেনি তার কোনও প্রভাব। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস অবস্থা নিম্ন ও মধ্যবিত্তের। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
যত দ্রুত সম্ভব সিন্ডিকেট দমন করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওই ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেন, সিন্ডিকেট দমন করে অতিশীঘ্রই দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করুন। খালি পেটে রাষ্ট্র সংস্কারের আলাপ মাথায় ঢুকবে না।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর জনগণের জন্য বিষফোঁড়াস্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য, যা প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে বর্তমান সরকারের সক্ষমতাকে। শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে গত দুই মাসে। কিন্তু, এখন তাদেরকে বেশ সমালোচনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে লাগামহীন বাজার নিয়ে। সবশেষ গত কয়েকদিনে নিত্যপণ্যের বাজারের যে পরিস্থিতি, তাতে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম সুস্পষ্ট।
সবশেষ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১০০ টাকার নিচে মিলছে না তেমন কোনও সবজিই। মাছ-মাংসের বাজারেও নেই স্বস্তি। নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে মুরগি আর ডিমের বাজারও।
বাজারগুলোতে ১০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র চার-পাঁচটি সবজি। যেখানে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে। আর পটোল, ঢ্যাঁড়স ও মুলার কেজি বাজারভেদে ৬০-৮০ টাকা। বাকি প্রায় সব সবজির জন্যই কেজিপ্রতি খরচা হচ্ছে ১০০-১৪০ টাকা। এর মধ্যে টমেটোর দাম আবার কেজিতে ছাড়িয়েছে ৩০০ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, উৎপাদন এলাকায়ও চড়া সবজি দর। শীতের আগাম সবজি উঠতে শুরু করেছে। তবুও মোকামগুলোতে সরবরাহ কম। এ ছাড়া বন্যার কারণে সবজির জোগান কমেছে। গত সপ্তাহের চেয়ে সবজির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা।
অথচ, সরকার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। গত ৭ অক্টোবর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার ও সরবরাহ পরিস্থিতি তদারকি এবং পর্যালোচনার জন্য জেলা পর্যায়ে ১০ সদস্যের বিশেষ টাস্কফোর্সও গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।